এসএসসি ফেল করলে কি কলেজে ভর্তি হওয়া যায়? খুব স্বাভাবিকভাবে এ প্রশ্নের উত্তর- না। তবে যদি আপনি ভারতের লাদাকে অবস্থিত স্টুডেন্টস এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্টের প্রশাসনের কাছে জিজ্ঞেস করেন তাহলে তারা জবাব দেবে- হ্যাঁ।
ভারতের এ কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য যোগ্যতা হলো এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করা অথবা পাঠে বিরতি দেয়া। কোনো সাধারণ ছাত্রকে এ কলেজে ভর্তি নেয়া হয় না। তবে হ্যাঁ, ভর্তি হতে হলে লাদাকি ভাষা অবশ্যই জানা লাগবে।
কলেজটি লেহ শহর থেকে ১৮ কিমি ভেতরে পাহাড়ে অবস্থিত। এটি সি-লেভেল থেকে ১০ হাজার ৫০০ ফিট ওপরে। এটি সোলার প্যানেলের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এখানের স্টুডেন্টরা পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। প্রত্যেক স্টুডেন্টের জন্য নির্দিষ্ট কাজ বরাদ্দ থাকে। এ কলেজের নিজস্ব খামার, সংবাদপত্র ও রেডিও রয়েছে। এখানে স্টুডেন্টদের পড়াশোনার থেকে তদের কাজের দক্ষতা বিকাশে বেশি জোর দেয়া হয়।
এ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সোনাম ওয়ানচু একজন আবিষ্কারক এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে, সমাজ যাদের কলঙ্ক মনে করে তারা আসলে কলঙ্ক নয়, সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করা হলে তারা হতে পারে সভ্যতার আলোর মশালের বাহক।
এ কলেজে মূলত শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন বিভিন্ন দেশের স্বেচ্ছাসেবকরা। স্বেচ্ছাসেবকদের ন্যূনতম ৪ সপ্তাহ কলেজে অবস্থান করতে হয়। তবে কেউ ইন্টার্নশিপ করতে চাইলে তাকে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ থাকতে হবে। একজন আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবক ক্লার্ক বলেন, এ কলেজটি তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এ ছাড়া এই কলেজে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফরে আসে। তারা উঁচু পাহাড়ে নিম্ন তাপমাত্রায় কিভাবে বসবাস করতে হয় তা শিখতে পারে। কলেজের বিশেষ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সামার ক্যাম্প ও শীতে আইস-স্কেটিং ট্রেনিং । শীতকালে লাদাকের পাহাড়ে বরফ জমলে আইস স্কেটিং শুরু হয় এবং বরফ গলে যাওয়া পর্যন্ত চলে ট্রেনিং। আইস স্কেটিং-এর দক্ষ স্বেচ্ছাসেবকরা এ ট্রেনিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন।