মোহাম্মদ আতাউর রহমান : বিজনেস ইনসাইডার প্রকাশ করেছে ১০টি কাজের কথা, যা করা যাবে ছাত্র জীবনেই। ঘরে বসেই করা যাবে এমন ১০ কাজের একটির সঙ্গে আপনিও যুক্ত করতে পারেন নিজেকে। এতে পড়ালেখার খরচ যেমন যোগাতে পারবেন, ভাগ্য সহায় হলে শিক্ষাজীবন শেষ না হতেই বড় উদ্যোক্তাও হয়ে যেতে পারেন। তখন চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না। আপনার পেছনেই অনেকে লাইন দেবে চাকরির জন্য।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট
এই সময়ে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট টারমিনলজি সবার কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনুষ্ঠান নিয়ে আয়োজকরা আর ভাবতে নারাজ। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের ওপর আয়োজনের ভার দিয়ে নিজেকে নির্ভার রাখতে চান সবাই। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মগুলো একদল চৌকস কর্মীর মাধ্যমে এই কাজের আঞ্জাম দেয়। একটু সাহস করে বাণিজ্যিকভাবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ আপনি করতেই পারেন। কোনো ফার্মের হয়ে যেমন কাজ করতে পারেন, তেমনি নিজেও ব্যবসায় নেমে পড়তে পারেন। সৃজনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি সঠিক প্রতিশ্রুতি যদি দিতে পারেন তাইলে এ ব্যবসায় আপনি সাফল্য পাবেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
এই যুগে কেউ একটা ইনভাইটেশন কার্ড করাতে গেলেও চান গ্রাফিক্সের কাজ করে কার্ডটিকে দৃষ্টিনন্দনভাবে কার্ডটিকে উপস্থাপন করতে। ইনভাইটেশন কার্ড, বিজনেস কার্ড, বিভিন্ন জিনিসের ডিজাইন, ওয়েবসাইটের ছবি প্রভৃতিতে এখন লাগছে গ্রাফিক্সের ছোঁয়া। আপনি যদি গ্রাফিক্সে পারদর্শী হয়ে থাকেন তবে আপনিও ধরতে পারেন এ বাজার। এ খাতে আপনার কত বছরের অভিজ্ঞতা তার চেয়ে দরকার আপনি কতটা দক্ষ ?ও সৃজনশীল। তাই সহজেই নিজেকে যুক্ত করতে পারেন এ কাজে। অল্প সময় নিয়ে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন এই কাজ দিয়ে।
ওয়েব ডিজাইন
মানুষ এখন ওয়েবসাইটের দিকে ঝুঁকছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরির পাশাপাশি ইদানিং অনেকেই ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটও তৈরি করছেন। আপনি ওয়েবসাইট ডিজাইনের ওপর তিন মাস কিংবা ৬ মাসমেয়াদি একটি কোর্স করে নিতে পারেন। এতে আপনার মধ্যে যে দক্ষতা আসবে তা দিয়ে ঘরে বসেই শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা। নিজ দেশের পাশাপাশি অনলাইলে যোগাযোগ থাকলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশের বাইরের ওয়েবসাইটে ডিজাইন করতে পারেন।
ফটোগ্রাফি
আজকের ছবি, আগামী দিনের স্মৃতি। কেউ এখন আর স্মৃতি হারাতে চান না; ফ্রেমবন্দী করে রাখতে চান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসার পর মানুষের যেন ছবি তোলার মাত্রা বহু গুণে বেড়ে গেছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে এখন ক্যামেরার ঝলক চোখে পড়ার মতো। বিয়ের মতো অনুষঙ্গে নবদম্পতিরা শুধু বিয়ের দিন ছবি তুলে ক্ষান্ত হচ্ছেন না; প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, পোস্ট ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এখন যেন সংস্কৃতি হয়ে গেছে। আর নতুন করে গড়ে ওঠা এ সংস্কৃতি ভাগ্য খুলে দিয়েছে তাদের; যারা ভালো ছবি তুলেতে পারেন। অল্প পরিসরে একটি মোটামুটি মানের ক্যামেরা নিয়ে ফেসবুকে পেজ খুলে শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা। এতে অল্প পুঁজিতে বড় ধরনের উপার্জনের সুযোগ রয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি পরামর্শক
বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। বিকাশমান এ খাতে উদ্যোক্তা হওয়া খুব কঠিন কিছু নয়। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষতা থাকলে ব্যক্তিগত একটি কম্পিউটারের পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি এ খাতের পরামর্শক হিসেবে কাজ করতে পারবেন। এ কাজ করতে হলে আপনাকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন প্রযুক্তির খোঁজ রাখতে হবে। কাজ পাওয়ার জন্য যোগাযোগে অবশ্যই ভালো হতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ পরামর্শক
সামাজিক যোগাযোগে হয় তো দিনের বড় একটি সময় ব্যয় করে থাকেন। হাই, হ্যালো করতে করতে কিংবা লাইক, কমেন্ট করেই হয়তো কাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সময় যেহেতু দিচ্ছেন-ই, তাই এটিকে উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন না কেন। সামাজিক যোগাযোগের নানা খুঁটিনাটি যদি আপনার জানা থাকে তা হলে কোনো প্রতিষ্ঠানকে তাদের প্রচারণার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের পরামর্শ আপনি দিতেই পারেন। কারণ সম্প্রতি ইদানীং প্রচলিত বিজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে কোম্পানিগুলোও সামাজিক যোগাযোগে তাদের প্রচারণায় আগ্রহী হয়ে উঠছে। কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিতে গিয়ে কাজটি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে একা সামলাতে না পারলে সঙ্গে নিতে পারেন বন্ধুটিকেও।
ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক
আপনি যদি খেলাধুলা, কারিগরি বা অন্য যে কোনো কিছুতে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে তা অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে পারেন। অনেকেই নানা কিছুতে দক্ষ হতে চান, প্রশিক্ষণ ও দিক-নির্দেশনা চান। আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়টি নিয়েই ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা শুরু করতে পারেন। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক কিংবা লিডারশিপ প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেও এই কাজটি করতে পারেন। আপনি যদি মোটরবাইক কিংবা প্রাইভেটকার চালাতে সক্ষম হন তবে তো আপনার আয়ের দুয়ার খোলা। উবার কিংবা পাঠাওয়ে নিজেকে যুক্ত করে সহজেই নিজের পড়ার খরচ যোগাতে পারেন। ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছেন মোটরসাইকেলের পেছনে করে আরেকজনকে নিয়ে যান না! এতে লাঞ্চের টাকাটাতো উঠে আসবে।নানা কিছুতে দক্ষ হতে চান, প্রশিক্ষণ ও দিক-নির্দেশনা চান। আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়টি নিয়েই ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা শুরু করতে পারেন। মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক কিংবা লিডারশিপ প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেও এই কাজটি করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্স মেকাপ আর্টিস্ট
মানুষের এখন ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মেকাপ করার প্রবণতাও। কোনো অনুষ্ঠানে মেয়েরা নিজেদের মেকাপবিহীন কল্পনাও করে না। তাই কোনো পার্লারে কিছুদিন যাতায়াত করে বিদ্যাটা রপ্ত করে ফেলুন। আপনি যদি নিজের জন্য ভালো মেকাপ করতে পারেন তাহলে অন্যকে করিয়ে দিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এ ছাড়া মেকাপ টিউটোরিয়াল ইউটিউবে আপলোড করেও গুনতে পারেন বাড়তি অর্থ।
গার্ডেনিং
শহরের বিভিন্ন উঠানে, ছাদে কিংবা ব্যালকনিতে অনেকেই গড়ে তুলেন শখের বাগান। সময়, সুযোগ ও পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে তারা যত্ন নিয়ে উঠতে পারেন না। আপনি ধরতে পারেন এমন শৌখিন বাগান মালিকদের। গাছপালা নিয়ে ভালো জ্ঞান থাকলে দিতে পারেন পরামর্শও। ইদানীং ঢাকা শহরেও গড়ে উঠেছে এমন বেশকিছু গ্রুপ। তারা পরিবেশ নিয়ে সচেতন করার পাশাপাশি এই খাত থেকে উপার্জনও করে নিচ্ছে।
ড্রাইভিং
আপনি যদি মোটরবাইক কিংবা প্রাইভেটকার চালাতে সক্ষম হন তবে তো আপনার আয়ের দুয়ার খোলা। উবার কিংবা পাঠাওয়ে নিজেকে যুক্ত করে সহজেই নিজের পড়ার খরচ যোগাতে পারেন। ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছেন মোটরসাইকেলের পেছনে করে আরেকজনকে নিয়ে যান না! এতে লাঞ্চের টাকাটাতো উঠে আসবে।
(প্রিয় পাঠক, এমন আরো কোনো কাজের কথা জানা থাকলে সবাইকে জানাতে পারেন মন্তব্যে)