মো: বাকীবিল্লাহ
অনলাইনে টাকা উপার্জনের কথা আমরা অনেকেই ভাবি। তবে সে ক্ষেত্রে যে ধরনের পরিশ্রম বা সময় দেয়া দরকার তা অনেকেই দিতে পারেন না। অনলাইনে উপার্জনের বিভিন্ন পন্থা আছে। তার মধ্যে জনপ্রিয় একটি পন্থা হলো ব্লগিং। যারা নিজের ইচ্ছেমতো সময়ে কাজ করতে চান, তাদের জন্য ব্লগিং হতে পারে অর্থ উপার্জনের একটি বড় উপায়। এ জন্য প্রয়োজন ইন্টারনেটসংযুক্ত কম্পিউটার এবং প্রয়োজনীয় মেধা ও দক্ষতা। ইন্টারনেট সুবিধা থাকলে বাড়ি থেকেও আপনি করতে পারবেন ব্লগিং। ব্লগিং থেকে আয়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিচে দেয়া হলো।
এক : দক্ষতা অর্জন করুন
ব্লগিং অনেকের কাছে সহজ মনে হলেও এটি আসলে বেশ পরিশ্রমের কাজ। এতে দরকার চমত্কার লেখার ক্ষমতা। ব্যাকরণগত ও বানানগত দিক দিয়ে নির্ভুল থাকাও দরকার। তাহলেই মিলতে পারে সাফল্য।
দুই : আগ্রহের বিষয় সুনির্দিষ্ট করুন
ব্লগিং শুরু করার আগে একটি বিষয় সুনির্দিষ্ট করুন। কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্লগিং করা বুদ্ধিমানের কাজ। আপনি চাইলে একাধিক বিষয়েও ব্লগিং করতে পারেন। তবে আপনার পাঠকের চাহিদার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার পড়াশোনার বিষয়, কর্মক্ষেত্রের বিষয় কিংবা আগ্রহের যেকোনো বিষয় নিয়ে ব্লগিং করতে পারেন।
তিন : নিজস্ব ওয়েবসাইট
আপনি যদি ব্লগিং করতে চান তাহলে নিজস্ব একটি ডোমেইন নিয়ে নেওয়াই ভালো। ডোমেইনভেদে বছরে হাজারখানেক বা এর চেয়ে কম খরচেই আপনি নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। আর বাত্সরিক এক হাজার টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন ছোটখাট হোস্টিংয়ের সুবিধা।
প্রাথমকিবভাবে ব্লগার ডট কম ও ওয়ার্ডপ্রেস ডটকমসহ বিভিন্ন প্লাটফরমেও লিখতে পারেন। তবে পেশাদার হিসেবে ব্লগিং করতে চাইলে নিজস্ব ওয়েবসাইটের বিকল্প নেই।
চার : রাতারাতি সাফল্য প্রত্যাশা করবেন না
অনেক ব্লগার আছেন, যারা ব্লগে গুগল অ্যাডসেন্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিয়ে মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করেন। কিন্তু তারা কেউ রাতারাতি এ অবস্থানে আসেননি। ব্লগিয়ের প্রথম কয়েক মাসে আয় অনেক কম হবে। আবার উল্লেখযোগ্য তেমন আয় না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে লেগে থাকুন। পাঠকদের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে লিখতে থাকুন। এক সময় আপনার সাইটটি সমৃদ্ধ-ভাণ্ডারে পরিণত হবে। তখন পাঠক আপনার ব্লগে আসবেই। এতে আপনার আয় নিশ্চিতভাবে বেড়ে যাবে।
পাঁচ : কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য লেখা
অনেক ব্লগ আছে যেখানে বাইরের ব্লগারদের টাকা দিয়ে লেখানো হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বর্ণনা কিংবা নানা প্রয়োজনীয় বিষয়ে এ ব্লগগুলো ব্যবহার করে। এসব ব্লগেও চাইলে লিখতে পারেন। আউট সোর্সিং-এর বিভিন্ন ওয়েবসাইট; যেমন- ওডেস্ক, ইল্যান্সার ইত্যাদি সাইটে এ ধরনের কাজ পেতে পারেন। আপনার দক্ষতা অনুযায়ী এখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ছয় : ধৈর্য হারাবেন না
ব্লগ চালুর পর তা প্রতিষ্ঠিত হতে মাস বা বছর লেগে যেতে পারে। এ সময়ে হতাশ হয়ে অনেকেই ব্লগিং ছেড়ে দেন। অধিকাংশ ব্লগারই দুই-চার মাসের মধ্যে তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ফলে টাকা রোজগারের আশা স্বপ্নই থেকে যায়। এ ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে নিষ্ঠার সাথে ব্লগিং চালিয়ে যান। তাহলে সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।
আর আপনার পাঠকদের ধরে রাখার কৌশল আয়ত্ত্ব করুন। নিজে বেশি বেশি পড়ুন। আপনার জ্ঞান সমৃদ্ধ করুন এবং তা সঠিকভাবে লেখায় ফুঁটিয়ে তুলুন।
সাত: লেখার ভাষা
ব্লগিং-এর ক্ষেত্রে লেখার ভাষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মূলত ভিজিটরের ওপর নির্ভর করবে আপনার আয় রোজগার। তাই যারা ইংরেজি ভাষায় দক্ষ, তাদের সফলতার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ পৃথিবীর সব দেশের মানুষই ইংরেজি ব্যবহার করেন। তবে বাংলা ভাষারও অনেক পাঠক আছেন। তাই দুটি ভাষায় সমান্তরালভাবে লিখতে পারলে সফলতার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বহুগুণ।
লেখকের ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/bakibillahbd