ফারাহ মাহমুদ:::::
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই কাজে যাবার উত্তেজনা কাজ করে আপনার মধ্যে নাকি ইচ্ছে করে আরো কিছুক্ষণ বিছানায় সময় কাটাতে? আমাদের জীবনের বেশিরভাগটাই কেটে যায় কাজে। আপনার ভালো লাগছে না এমন কিছু করে এই মূল্যবান সময়গুলোকে নষ্ট করার কোনো মানে নেই। অন্তত নিজের কাজের প্রতি আগ্রহ থাকা উচিৎ।
বিশ্বের মাত্র ১৩ শতাংশ কর্মজীবী তাদের কাজের প্রতি আগ্রহী। তাহলে বাকি ৮৭ শতাংশের কী খবর? বুঝতে পারছেন না কিভাবে শুরু করবেন? নিজের কাজের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখার জন্যে নিচে উল্লেখিত পাঁচটি পদক্ষেপ নিতে পারেন।
১। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘কেন?’
শুরু করার জন্যে মৌলিক প্রশ্ন এটা। আপনি যে কাজটি করছেন, তা কেন করছেন? আপনার আগ্রহ আছে এমন কোনো কাজে নিয়োজিত থাকুন। তারপর ভাবুন কেন আপনি এ কাজটি করছেন। এটা আপনার ক্যারিয়ারের প্রতি পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে সাহায্য করবে।
২। ডিজিটাল লক্ষ্য ঠিক করুন
আপনি কেন কাজটা করছেন তা জানার পর, নিজেকে কাজে ধরে রাখতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু লক্ষ্য ঠিক করুন। এক্ষেত্রে ডিজিটাল এপ্লিকেশনের সাহায্য নিতে পারেন, নির্দিষ্ট সময় পরপর আপনাকে লক্ষ্যের কথা মনে করিয়ে দেবে। বারো মাসের মধ্যেই পদন্নোতি চান? কী কী পদক্ষেপ নিতে পারেন এজন্যে? পরিকল্পনা করে ক্যালেন্ডারে টুকে নিয়ে পুরো দমে কাজ শুরু করুন।
৩। নতুন কিছু শিখুন
প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে নিজের মস্তিষ্ককে সচল রাখুন। বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারেন বা কনফারেন্স ও সেমিনারে যোগ দিতে পারেন। নিজের কমফোর্ট জোনের বাইরে কিছু করার উদ্যোগ নিন কিন্তু সেটা আপনার ক্যারিয়ারের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ হতে হবে। এই উদ্যোগে আপনার বস খুশি হবেন, আপনার কাজ আগের চেয়ে ভালো হবে। তাছাড়া এই সুযোগে আপনার সিভিতে নতুন কিছু যোগ করবে হবে।
৪। মন্তব্য নিন
আপনার কাজটা কেমন হলো এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না পেলে নিজেই জিজ্ঞেস করুন। একজন ভালো ম্যানেজার দেখতে চাইবেন আপনি আপনার ক্যারিয়ারের প্রতি কতটা আগ্রহী। কাজটা কেমন হলো – এই মন্তব্য আপনাকে আরো ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে। সবসময় নতুন কিছু শিখতে থাকার জন্যে এটা বেশ কার্যকরী উপায়। ক্যারিয়ারে শুধু এক জায়গায় আটকে থাকলে, মাস শেষে স্যালারি পাওয়া ছাড়া কাজের প্রতি আপনার আর কোনো উদ্যম কাজ করবে না। এই পন্থা কিছুদিন কাজ করতে পারে, কিন্তু এভাবে দীর্ঘ মেয়াদে কর্মজীবনে আগ্রহ ধরে রাখা সম্ভব না।
৫। মনোনিবেশ করুন
ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রতিটা সকাল শুরু করুন। সারাদিন নিজেকে ও অন্যদের কী বলছেন সেটা সতর্কতার সাথে খেয়াল করুন। নিজের কাজ নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা ও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। অফিসে পরচর্চা থেকে দূরে থাকুন। সবকিছু ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। আপনি যখন কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচকভাবে মনোনিবেশ করা অনুশীলন করবেন, বোনাস হিসেবে আপনার কাজের চাপ/স্ট্রেস কমবে।
আপনি যদি নিজের কাজকে ঘৃণা করে থাকেন, তাহলে পছন্দমতো কাজ পাবার আগ পর্যন্ত এই পাঁচটি উপায় অবলম্বন করে কাজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন। অপছন্দ করেন এমন কোনো ক্যারিয়ারে থাকলে কাজের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখা সম্ভব না। আমাদের সবারই কখনো না কখনো এমন হয়, কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। এটা দূর করার অন্যতম উপায় ব্যক্তিগত উন্নতি/বিকাশে মনযোগী হওয়া। ক্যারিয়ারে আগ্রহ ধরে রাখতে চাইলে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন এবং প্রতিনিয়ত শিখতে থাকুন।