সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে ভর্তির আবেদনপত্র আগামী ১৬ আগস্ট থেকে অনলাইনের মাধ্যমে পূরণ করা যাবে। এ বছরই প্রথম অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনের সুযোগ পাবেন। অনলাইনে ফরম পূরণের এ কার্যক্রম চলবে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা শাখা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
মাধ্যমিক (এসএসসি), উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) অথবা সমমানের পরীক্ষায় সম্মিলিতভাবে নূন্যতম জিপিএ-৮ অর্জনকারীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এ দু’টির কোনো একটিতে প্রাপ্ত জিপিএ-৩.৫০ কম হলে ওই শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবেন না। ভর্তি ফিস বাবদ ৬শ’ টাকা টেলিটক মুঠোফোন থেকে এসএমএস’র মাধ্যমে জমা দিতে হবে। আবেদনপত্র dghs.teletalk.com.bd এই ঠিকানায় পাওয়া যাবে। আবেদনের জন্য অনলাইনে প্রবেশের পূর্বে ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা অথবা স্ক্যান করা পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও শিক্ষার্থীর নিজের স্বাক্ষরের স্ক্যান করা ছবি প্রস্তুত রাখতে হবে। আবেদনের জন্য একটি ই-মেইল ঠিকানার প্রয়োজন হবে। শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য কমপক্ষে একটি মোবাইল নম্বর দিতে হবে। ফরম পূরণের পূর্বেই নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ/ইউনিট বাছাই করে নিতে হবে। একবার পছন্দক্রম চূড়ান্তের পর তা পরিবর্তন করা যাবে না। প্রত্যেক কলেজের জন্য পৃথক কোড নম্বর রয়েছে। ভর্তি ফরম যথাযথভাবে পূরণ শেষে একটি কোড নম্বর দেয়া হবে। এই কোড নম্বর ব্যবহার করে টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে। মেডিকেলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিটি www.dghs.gov.bd এই ঠিকানায়ও পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আগামি ২৩ সেপ্টেম্বর একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ বলেন, এমবিবিএস ও বিডিএস পরীক্ষা পদ্ধতি একই। তাই একত্রে পরীক্ষা নিতে সমস্যা হবে না।
প্রসঙ্গত, এর আগে এই দুটি পরীক্ষা অধিদফতরের কেন্দ্রীয় তত্ত্বাবধানে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হতো।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে এ বছর থেকে সকল সরকারি মেডিকেল কলেজে বর্তমান আসন সংখ্যার উপর ১০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পাশাপাশি নতুন আরো ৩টি সরকারি ও ১টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ চালু করা হচ্ছে। এই ৪টি নতুন কলেজের প্রতিটিতে ৫০ জন করে মোট ২শ’ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।
এ প্রসঙ্গে ডা. সিফায়েত উল্লাহ বলেন, কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও কুমিল্লায় ৫০ আসনের তিনটি নতুন সরকারি মেডিকেল কলেজে এ বছরই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
চিকিৎসা শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা গেছে, নতুন ৩টি মেডিকেল কলেজ চালু হলে সরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ২১টি হবে। এসব মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে মোট ২ হাজার ৬শ ৮৬জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন। এছাড়া ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ও চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সোহরাওয়ার্দি মেডিকেলের সংলগ্ন ডেন্টাল ইউনিটে বিডিএস কোর্সে ২শ ৬৫টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এর বাইরে এমবিবিএস কোর্সে ৭৪টি এবং বিডিএস কোর্সে ১৫ সংরক্ষিত আসন রয়েছে। বেসরকারি খাতে ৪৪টি মেডিকেল কলেজ পরিচালিত হচ্ছে। বেসরকারি কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৩শ ৫০টি। বেসরকারি ১৩টি ডেন্টাল কলেজে আসন রয়েছে ৭শ ৬৫টি।
অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. শাহ আবদুল লতিফ বলেন, ফরম সংগ্রহ করা ও জমা দিতে গিয়ে আগে শিক্ষার্থীদের গলদঘর্ম অবস্থার মুখোমুখি হতে হতো। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনপত্র পূরণের কাজ শুরু হলে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ অনেক কমে আসবে।
এদিকে জানা গেছে, এইচএসসি পাশের পর প্রথমবারে যেকোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে জিপিএ এবং ভর্তি পরীক্ষায় অর্জিত মোট নম্বরের উপর থেকে পাঁচ নম্বর কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থীরা বেশি সুযোগ পাবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
শীর্ষ নিউজ ডটকম