‘শান্তিতে সংগ্রামে সমুদ্রে দুর্জয়’ এই মূলনীতি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। অনেকেরই স্বপ্ন থাকে এই বাহিনীতে কাজ করার। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তর করার সময় এসেছে এখন। সম্প্রতি তারা অ্যাক্টিং সাব-লেফটেন্যান্ট পদে লোক নেবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এখানে এ পদে কয়েকটি শাখায় লোক নেওয়া হবে। এর মধ্যে এক্সিকিউটিভ শাখা, সাপ্লাই শাখা, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইলেকট্রিক্যাল শাখা। এ ছাড়া শিক্ষা শাখার মধ্যে আইন ও মেডিকেল শাখা রয়েছে। পুরুষ ও মহিলা উভয় প্রার্থী এখানে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করতে হবে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
আবেদনের যোগ্যতা
এই পদে আবেদন করতে হলে প্রতিটি শাখার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩.০ এবং স্নাতক পরীক্ষায় ২.৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। এক্সিকিউটিভ, সাপ্লাই, ও ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার জন্য বয়স সর্বোচ্চ ৩০ হতে হবে। আর শিক্ষা শাখার জন্য বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর লাগবে। শুধু শিক্ষা শাখার (মেডিকেল) জন্য ২৮ বছর হলেই হবে। পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং মহিলাদের জন্য ৫ ফুট ১ ইঞ্চি হতে হবে। ওজন পুরুষদের জন্য ৫০ কেজি ও মহিলাদের জন্য ৪০ কেজি। বুকের মাপ পুরুষদের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি, প্রসারিত অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি। মহিলাদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ২৮ ইঞ্চি, প্রসারিত অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি হতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া
এই পদের জন্য অনলাইন ও সরাসরি এই দুই পদ্ধতিতেই আবেদন করা যাবে। অনলাইনে আবেদনকারী ট্রাস্ট ব্যাংক মোবাইল মানির গ্রাহক হলে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ১৬২০১ নম্বরে একটি এসএমএস করতে হবে। এ ক্ষেত্রে টিবিএমএম অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ৫২০ টাকা থাকতে হবে। এসএমএস করার পর প্রার্থী একটি ট্রানজেকশন আইডি পাবে। এরপর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ওয়েবসাইট www.bangladeshnavy.org থেকে Join Navy লিংকে এ ক্লিক করে অথবা www.joinnavy.mil.bd ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করে জমা দেওয়া যাবে। প্রার্থীদের অনলাইনে কলআপ লেটার প্রেরণ করা হবে। এ ছাড়া সরাসরি আবেদনের ক্ষেত্রে যেসব প্রার্থী টিবিএমএমের গ্রাহক নন, তাঁদের ট্রাস্ট ব্যাংকের মনোনীত পে পয়েন্ট বা ট্রাস্ট ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে ‘বিএন রিক্রুটমেন্ট ফান্ড’ এর অনুকূলে ৫০০ টাকা ফি জমা দিতে হবে। এরপর প্রার্থী একটি Notification SMS ও মানিরিসিপ্ট পাবেন, যাতে একটি ট্রানজেকশন আইডি থাকবে। এ আইডি ফরম পূরণের ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফটের ঘরে লিখতে হবে। ফরম পূরণ করার পর আবেদনপত্রের সঙ্গে ছবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে তা নির্দিষ্ট ঠিকানায় জমা দিতে হবে। এরপর শুরু হবে প্রার্থী নির্বাচনপ্রক্রিয়া।
নির্বাচনপ্রক্রিয়া
আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর আগামী ৬ থেকে ৯ এপ্রিল তারিখে বিএন কলেজ ঢাকায় প্রার্থীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রাথমিক সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। এখানে মূলত প্রার্থীদের ওজন, উচ্চতা, বুকের মাপ দেখা হয়। প্রাথমিক জ্ঞানের ওপর প্রাথমিক সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ১০ এপ্রিল তারিখে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। নৌবাহিনী সদর দপ্তর সূত্র থেকে জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষা হবে তিনটি বিষয়ে। বুদ্ধিমত্তা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান। মোট ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হবে। বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে ৪০, ইংরেজিতে ৩০ ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ৩০ নম্বর থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের আবার আইএসএসবি কর্তৃক মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। আইএসএসবি কর্তৃক নির্বাচিত প্রার্থীদের আবারও চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিতে হবে। এরপর তাঁদের নৌবাহিনী সদর দপ্তরে অনুষ্ঠেয় সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হবে।
প্রশিক্ষণ
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি পতেঙ্গা, চট্টগ্রামে ছয় মাসের প্রশিক্ষণে পাঠানো হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের নৌবাহিনীর বিভিন্ন জাহাজ বা ঘাঁটিতে নিয়োগ করা হবে।
বেতন ও সুযোগ-সুবিধা
চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীদের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সশস্ত্র বাহিনীর বেতনক্রম অনুযায়ী বেতন দেওয়া হয়। তাঁরা বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ, বাসস্থান, সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধা, ডিওএইচএসে প্লটপ্রাপ্তির সুবিধা, উন্নত চিকিৎসাসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদান করে বিদেশভ্রমণ ও আর্থিক সচ্ছলতা অর্জনের সুযোগ পান।
বিস্তারিত যোগাযোগ
পরিচালক, পার্সোনাল সার্ভিসেস পরিদপ্তর, নৌবাহিনী সদর দপ্তর, বনানী, ঢাকা ১২১৩।
ফোন: ৯৮৩৬১৪১-৯ বর্ধিত: ২২১১, ২২১৪, ২২১৫।
সূত্র: প্রথম আলো