বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ আর কেড়ে নিয়েছে আবেগ-হাসি। অফিসে কাজ, সংসারে ঝামেলা- দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ইত্যাদি। তাই সময় কোথায় বিশ্রাম, আড্ডা, খোশগল্প কিংবা আলাপচারিতার! এমনকি এতটুকু সময় নেই সামান্য একটু হাসার। আবার যদি কারো পদবি হয় অফিসের ‘বড় কর্তা’ কিংবা ‘বিগ বস’ তা হলে তো হাসি একদম নিষেধ। কারণ এতে নাকি ব্যক্তিত্ব নষ্ট হয়। ছোট কর্তার হাসি নিষেধ, কারণ বড় কর্তা হয়তো হবেন রুষ্ট। মহা ঝামেলা। কিন্তু সামান্য একটু হাসি আপনার সুস্থতাকে কতখানি প্রভাবিত করতে পারে, তা যদি একটু খতিয়ে দেখতেন তবে হয়তো সব ভুলে আপনিও একটুখানি হাসতেন।
লোমা লিন্ডা ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি বিভাগের ডা: লোরেন্স বার্ক হাসি নিয়ে বিস্তর গবেষণা এবং কাজ করে অনেক মজার এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন। তার মতে, হাসি মানুষের উদ্বেগ বৃদ্ধিকারী হরমোন করটিসোল নিঃসরণ কমায়; যা আপনাকে করবে বিরুদ্বেগ। নির্মল হাসি রক্তে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী লিস্ফোসাইটের প্রবাহ বৃদ্ধি করে। হালকা হাসি হৃদযন্ত্রের গতি হ্রাস করে এবং সাথে সাথে উচ্চরক্তচাপকেও কমায়।
আপনি যদি প্রতি দিন ঘণ্টায় ৩০ সেকেন্ড হাসতে পারেন, তাহলে আপনার বুক ও কাঁধের গোশতপেশি সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হয়ে আপনাকে করবে সতেজ এবং নিরুদ্বেগ। আপনার আক্রমণাত্মক একগুঁয়ে চরিত্রকে আমূল বদলে দেবে হাসি এবং সেই সাথে হার্ট অ্যাটাকেরও ঝুঁকি কমাবে। মানুষ কখনো একই সাথে হাসি এবং রাগ প্রকাশ করতে পারে না। তাই হাসি আপনার রাগকেও নিয়ন্ত্রণ করবে।
মুচকি হাসি আপনার ত্বককে করবে লাবণ্যময় এবং কর্মনীয়। কমেডি অর্থাৎ হাসির ছায়াছবি মানুষের মুখের লালার সাথে ইমিউনোগ্লোবিউলিন নিঃসৃত করে, যা এক ধরনের ঠাণ্ডা ও কাশি প্রতিরোধে কার্যকরী। তাই প্রতিদিন অন্তত একবার হলেও মনে মনে কিংবা মুচকি হাসুন আর যদি হন সাহসী তবে শব্দ করে অট্টহাসি হাসুন- এবং সুস্থ থাকুন।