ঘুম হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ সময়সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থাকে স্তিমিত। ঘুম শরীরকে চাঙা করে পরবর্তী কাজের জন্য তৈরি করে মানুষকে। ঘুম কম হলে অবসাদ ও ক্লান্তি তৈরি হয়ে হারিয়ে যায় কর্মোদ্যম। আবার যারা অফিসে একটানা কাজ করেন, তাদেরও ভর করতে পারে ক্লান্তি। এ থেকে মুক্তির উপায় বাতলে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। সেটা হচ্ছে অফিসে ঘুম। তারা বলছেন, অফিসে কর্মীরা দুপুরের পর বিকেলে মাত্র ২০ মিনিটের হালকা ঘুম দিলে বাড়বে কর্মীদের সৃজনশীলতা।
বিকেলে যদি অফিসে কেউ হালকা ঘুমের মধ্য থাকেন, তবে তাকে ঘুম থেকে না ডাকাই ভালো। কারণ, নতুন এক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, বিকেলে ২০ মিনিটের হালকা ঘুমে অফিসের কর্মচারীদের সৃজনশীলতা বাড়বে। এ ঘুমে ক্লান্তি দূর হয়ে চনমনে তরতাজা বানাবে কর্মীকে। এ ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তেজদীপ্ত হবেন কর্মীরা।
যদি আপনার বস খুঁতখুঁতে হয় এবং আপনার কাছ থেকে বেশি কিছু আসা করেন, তবে এর একটি সহজ সমাধান আছে। বিকেলবেলা একটু ঘুমিয়ে নিন, দেখবেন কাজ হবে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে বিকেলের দিকে ২০ মিনিট হালকা ঘুম কর্মীদের মধ্য সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানে ক্ষমতা বাড়াবে। যুক্তরাজ্যের টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অফিসে স্বল্প সময়ের ঘুমের আদর্শ সময় হলো বেলা দুইটা থেকে চারটার মধ্য। এই সময়ে ২০ মিনিটের ন্যাপ বা হালকা ঘুম কর্মীদের কাজের স্পৃহা বাড়িয়ে দেয়। আর এ ঘুম অন্যদের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দেয়।
ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০ মিনিটের এ হালকা ঘুমে ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা এবং বিষণ্নতার ঝুঁকি কমাবে। আপনি যদি পর্যাপ্ত না ঘুমান, তবে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
ওই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেওয়া নেরিনা রামলাখান বলেন, ‘যাদের এক ঘণ্টা কম ঘুম হয়, তাদের ঘুমের জন্য সংগ্রাম করতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা রাতে পাঁচ ঘণ্টার কম ঘুমান, তাদের চেয়ে যারা চার ঘণ্টা ঘুমান, তারা নিজেদের পরিবর্তন নিজেরাই দেখতে পাবেন। ঘুমের এ পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে কম।’
ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়, অফিসের বসদের অবশ্যই কর্মীদের বিকেলবেলা কিছু সময়ের জন্য ঘুমানোর অনুমতি দেওয়া উচিত।নেরিনা রামলাখান বলেন, ‘কর্মীদের দিনের বেলায় কিছুক্ষণের জন্য ঘুমানোর অনুমতি দেওয়া মনে হতে পারে একটু অস্বাভাবিক। মনে হতে পারে, এভাবে সপ্তাহে কর্মীদের একটি ঘণ্টা হয়তো হারিয়ে যাবে। তবে এতে কর্মীদের সৃজনশীলতা বাড়বে। আর এটি একটি ন্যায্য আবদারও।’ তথ্যসূত্র: এএনআই ও এনডিটিভি।