কর্পোরেট যুগের চূড়ান্ত মুখোমুখি আমরা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মেধাকে কাজে লাগানোর বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধ। এ যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকের কোন অবস্থান নেই। কদর এসে সেলাম ঠোকে বিজয়ীর পদতলে। এ যুদ্ধ জীবন ও জীবিকার যুদ্ধ। সর্বতোভাবে ক্যারিয়ারকে গঠনের যুদ্ধ।
ক্যারিয়ার বিষয়ে এ ধরনের নানা কথোপকথনের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার ইন্টেলিজেন্স’র সাথে সঙ্গ দিয়েছেন- নজরুল ইন্সটিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত, দৈনিক আমার দেশের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বিশিষ্ট সংবাদিক ও কলামিস্ট কবি আবদুল হাই শিকদার।
ভালো লেখক হতে কী প্রয়োজন?
– প্রথমত: কেউ কাউকে লেখক বানাতে পারে না। লেখার প্রতি একনিষ্ঠতা, আন্তরিকতা ও পরিশ্রম থাকলে একদিন লেখক নিজেই ভালো লেখক হয়ে ওঠেন। সে ক্ষেত্রে একজন লেখককে সব সময় চোখ-কান খোলা রেখে সমাজ-সংস্কৃতি ও যাপিত জীবনের দুঃখ-কষ্টকে হৃদয়ে ধারণ করতে হয়। আর দ্বিতীয়ত: পড়ার কোন বিকল্প নেই, সুতরাং পড়া, পড়া এবং পড়া।
লেখালেখিটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়াটা কতখানি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন ?
– অবশ্যই যুক্তিযুক্ত। কেন নয়? তবে, আমাদের ভেতর এমন কি কেউ আছেন, যিনি লেখালেখিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পেরেছেন? সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দেশের লেখকরা লেখালেখিটাকে খণ্ডকালীন একটি বাণিজ্য হিসেবে নিয়েছেন। যে কারণে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের লেখনীতে জীবনের রহস্যটুকু যথাযথ উন্মোচিত নয়। যেটা এক সময় বাঙালি মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজে মোটামুটি ছিলো। কিন্তু বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে বহু আগেই সেটা হারিয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে বিষয়টি বেশ কঠিন।
লেখালেখির জগতে কীভাবে এলেন?
– হা..হা.. কীভাবে যে এলাম সেটিই তো প্রশ্ন। আসলে সংক্ষেপে যদি বলি তবে আব্বার জন্যে। পারিবারিকভাবে আমাদের পুরনো একটি লাইব্রেরি ছিল। সেই সুবাদে ছোটবেলাতেই শেষ করেছিলাম, মাইকেলের মেঘনাথ বধ, কায়কোবাদের মহাশ্মশান, ইসমাঈল হোসেন সিরাজীর রায় নন্দিনীসহ অনেক কলোত্তীর্ণ গ্রন্থ। সুতরাং লেখালেখির জন্য একটি পিপাসা তো ছিলোই। এভাবেই হয়তো…
আপনাকে একজন সফল মানুষ বলে জানি। আপনার এই সফলতার মূল অনুপ্রেরণা কী?
– সফলতা ঠিক বলবো না, তবে লক্ষ্যে পৌঁছবার জন্য আমার প্রয়াস আছে, প্রেরণা আছে এবং সেই সাথে ক্ষুধাও।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ক্যারিয়ার হিসেবে সাংবাদিকতার সম্ভাবনা কতটুকু?
– সম্ভাবনা তো অনেক! এটাতো এখন একটা ইন্ডাস্ট্রি। কারণ হচ্ছে, এখানে কালো টাকার মালিক আছে। হলুদ সাংবাদিক আছে আবার ভালো মানুষও আছে। সুতরাং সাংবাদিকতাকে ক্যারিয়ার হিসেবে অবশ্যই নেয়া যেতে পারে।
আপনাদের সময়ে ক্যারিয়ার বিষয়ক কোন মাগাজিন ছিলো কি? ক্যারিয়ার ইন্টেলিজেন্স-এর পাঠকদের জন্য যদি কিছু বলতেন।
– নামও তো শুনিনি (একটু হেসে)। এখন হাত বাড়ালেই অনেক কিছু মেলে। বর্তমান প্রজন্ম শেকড় সচেতন না হলেও ক্যারিয়ার সচেতন। এটা আবার মন্দ না, যে পাখি ডানা মেলে উড়ে যায় দিগন্তের খোঁজে, সে সন্ধ্যাবেলায় আবার ফিরে আসে আপন ঠিকানায়। সুতরাং প্রতিষ্ঠিত হওয়াটাও অনেক কিছুর মতো জরুরি।
সময় দেবার জন্য -ক্যারিয়ার ইন্টেলিজেন্স’র পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
– আপনাকেও ধন্যবাদ ।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মতিন মুনাওয়ার