হুমায়ূন আহমেদ
কথা সাহিত্যিক
হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশের জনপ্রিয় একজন কথা সাহিত্যিক। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং নাট্যকার। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর আরেক পরিচয় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক। অতুলনীয় জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও অনেকটা অন্তরালে জীবন-যাপন করেন তিনি। লেখালেখি ও চিত্রনির্মাণের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। কিছু হয়েছে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত।
ভালো লেখক হতে করণীয়, লেখালেখিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়া, সফল হওয়ার মন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে ক্যারিয়ার ইনটেলিজেন্সের সাথে কথা বলেছেন তিনি।
ভালো লেখক হতে হলে কী প্রয়োজন?
– আসলে ভালো লেখক হতে হলে আগে নিজেকে জানতে হবে। নিজের জ্ঞানের গভীরতা মাপতে শিখতে হবে। আমি কী লিখতে চাই, কীভাবে লিখতে চাই, কোন ঢং-এ লেখাটা উপস্থাপন করবো, পাঠকের ফিডব্যাক কী হতে পারে সব কিছুই ভালো লেখকের এক একটি উপকরণ। সমসাময়িক চাহিদা বোঝার মানসিকতা মাথায় রেখে লিখতে বসলে এমনিতেই পাঠক যা চায় তা-ই লিখতে পারবে একজন লেখক। সবচেয়ে বড় কথা হলো পাঠকের মাঝে নিজের নবজন্ম লেখাটার স্থান করে নেয়ার মধ্যেই কিন্তু লেখকের তপস্যার ষোল আনা নির্ভর করে। এর ওপরেই লেখকের জনপ্রিয়তা কিংবা ভালো লেখক হওয়ার রহস্য নির্ভরশীল। আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা হলো অধ্যয়ন। চেষ্টা করতে হবে দেশের বাইরের সাহিত্যিকদের গল্প, উপন্যাস, জীবনী পড়ার। দেশীয় সাহিত্যতো অবশ্যই পড়তে হবে।
লেখালেখিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়াটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
– ক্যারিয়ার শব্দটিকে আমার ভাষায় বলবো জীবনে বাঁচার জন্য একটা শক্ত খুঁটি। যেটা আকড়ে ধরে জীবনের মৌলিক বাসনাগুলো পূরণ করা সম্ভব হয়। লেখালেখিটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়াটা যুক্তিযুক্ত বললেও যেমন ভুল হবে, অযৌক্তিক বললেও ঠিক তেমনই ভুল হবে। কারণ, ক্যারিয়ার আর লেখালেখিটা একদম আলাদা বিষয়। লেখালেখিটা অনেকটা সাধনার ফল, ল্যাবরেটরির গবেষণার মতো। তবে এখানে একটা বিষয় আছে। তা হলো- লেখক হিসেবে নিজেকে যদি বাণিজ্যিকভাবে দাঁড় করানো সম্ভব হয় তবে লেখালেখির চেয়ে ভালো ক্যারিয়ার আর দু’য়েকটা হবে না। এক্ষেত্রে ভোক্তার চাহিদা মানে পাঠকের চাহিদা পরিপূর্ণ হলে ক্যারিয়ারে তিনি সফল।
জীবনে সফল মানুষ হওয়ার মূল মন্ত্রগুলো যদি বলতেন…
– জীবনে বড় হতে কিংবা সফল হতে হলে আসলে গণিত বইয়ের পিথাগোরাসের উপপাদ্যের মত কোনো সূত্র নেই। জীবনের একটা রোডম্যাপ অঙ্কন করে সে ম্যাপ অনুযায়ী নিজেকে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টাই একজন মানুষের জীবনে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র।
লেখালেখির জগতে কীভাবে এলেন?
– হা হা হা….। জন্মের পর পরেই এসেছি। আমি ছোট থেকেই লেখালেখি করতাম। রম্য লেখার প্রতি দুর্বলতা, তারপর ভালোবাসা। সেই থেকে আমার এ জগতে আসা।
বর্তমান পেক্ষাপটে ক্যারিয়ার ম্যাগাজিনের প্রয়োজন আছে কি?
– যে কোনো বিষয়ে মানুষকে দিক-নির্দেশনা দেয়ার প্রয়োজন সবসময় ছিল আর সবসময়ই থাকবে। চলার পথকে আরো সহজ করতে এ ধরনের ম্যাগাজিন প্রয়োজন।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ
নাজমুস সাকিব