অতিরিক্ত সময় না দিয়েই নিজের ব্যবসায়ে আনুন সমৃদ্ধি
মো: বাকীবিল্লাহ
আমাদের জীবনে সময়টা খুব সীমিত। প্রতিদিন পনের-ষোল ঘণ্টা ব্যবসায় বা অফিসের কাজ করার পরও কখনো মনে হয়- আরেকটু সময় পেলে অমুক কাজটা করা যেত! দিনটা আরেকটু বড় হলে ভালো হতো! বিশেষ করে ব্যবসায় উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপকদের এমন অবস্থা নিত্যদিনের। কিন্তু দিন তো আর ২৪ ঘণ্টার বেশি হবে না। তাহলে উপায়?
উপায় অবশ্যই আছে। তবে দিনের সময় বৃদ্ধি করে নয়। বরং ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাজের ফাঁকে আরেকটু কাজ করে আপনার নতুন ব্যবসায়কে পরিচিত করে তুলতে পারেন। করতে পারেন মার্কেটিং। আর হ্যাঁ, এজন্য আপনার ছুটির দিনকে কাজে লাগানো কিংবা অফিস সময়ের বাইরে নতুন সময় বের করতে হবে না। বরং আপনার নিয়মিত কর্মঘণ্টার ভেতরেই কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। আসুন জেনে নিই সে কৌশলগুলো।
১. আপনার মানিব্যাগ অথবা অফিস ব্যাগে এক প্যাকেট বিজনেস কার্ড (ভিজিটিং কার্ড) রাখুন। তেমনিভাবে আপনার গাড়িতেও রাখতে পারেন এ কার্ড।
– এরপর যখন আপনি বাইরে রেস্ট্যুরেন্টে খেতে যাবেন, তখন একটি কার্ড টেবিলে ফেলে আসুন। হয়তো কার্ডটি পরবর্তী সময়ে কারো হাতে পড়বে। আর তিনি জেনে যাবেন আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে। দরকার হলে আপনাকে ফোনও করতে পারবেন।
– আপনার প্রতিষ্ঠানের গ্রাহককে বিলের সাথে একটি কার্ড পাঠাতে ভুলবেন না।
– যখন কোনো বুক স্টল বা লাইব্রেরিতে যাবেন, তখন আপনার ব্যবসায়ের সাথে প্রাসঙ্গিক বা যে কোনো বইয়ের মধ্যে একটি কার্ড লুকিয়ে রাখুন। যিনি আপনার পর বইটি দেখবেন বা পড়বেন তিনি ওই কার্ডটির মাধ্যমে আপনার ব্যবসায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
– আপনার প্রতিষ্ঠানের গেটে কিংবা কাউন্টারে গ্রাহকদের জন্য কিছু বিজনেস কার্ড রেখে দিন। এটা আপনাকে নিয়মিত গ্রাহক পেতে সাহায্য করবে।
– কিছু কার্ড আপনার বন্ধু-স্বজনকে দিয়ে রাখুন।
২. প্রতিদিন অন্তত নতুন একজনের সাথে সাক্ষাতের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। কখনো কাউকে আপনার ব্যবসায় বা শখের কোনো বিষয় নিয়ে আগ্রহী মনে হলে কিংবা আলোচনা করতে দেখলে সে সূত্র ধরে তার সাথে পরিচিত হয়ে নিন। বাসে, ব্যাংক বা অফিসের অপেক্ষমান লাইনে পাশের লোকটির সাথে কথাবার্তা বলুন। হয়তো তার সাথে আর কখনো দেখা বা কথাবার্তা হবে না, তবুও আপনার ব্যবসায় বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তাকে জানানোর সুযোগটা হারাবেন কেন?
৩. কখনো একা খাবেন না। আপনি খান, অন্যরাও খায়। সুতরাং আপনার বন্ধু ও সহযোগীদের ধরে রাখতে এ সময়টাকে ব্যবহার করবেন না কেন? এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন-
– লোকদেরকে আপনার যোগাযোগের মধ্যে রাখতে অফিস কার্যদিবসের বাইরে সময় বের করতে হবে না।
– মানুষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে আপনার কোম্পানির বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করে নিজের মানসিক চাপ কমাতে পারবেন।
– আপনার ও আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম তাদের মনের সামনে থাকবে। ফলে ব্যবসায় বা সার্ভিসের ব্যাপারে তারা অন্যদেরকে আপনার কাছেই পাঠাবে।
৪. নিজের পেশাগত সংস্থার বাইরে বিভিন্ন সামাজিক বেসরকারি সংস্থার সাথে যোগাযোগ রাখুন। সেটা হতে পারে কোনো ফুটবল টিম, মসজিদ-মাদরাসা, মন্দির-গির্জা কিংবা ক্লাব অথবা দাতব্য প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিন। আপনি যদি এসবে কখনো অংশ না নিয়ে থাকেন তাহলে এখনই এ ব্যাপারে চিন্তা করা উচিত। এটা আপনার কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনে ভারসাম্য আনতে সাহায্য করবে। উপরন্তু আপনার নতুন ব্যবসায়ের জন্য পেয়ে যেতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল।
পরামর্শ গুলো ভাল লাগল।