আর্থিক স্বাধীনতা বলতে বোঝায়, আপনার পরবর্তী জীবনে টাকার জন্য কাজ না করে চলতে পারার সক্ষমতা। আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়ার পাঁচটি নিয়ম জানতে আপনি এই নিবন্ধ পড়া শুরু করেছেন। কিন্তু আপনাকে আরো ৫টি বোনাস দিচ্ছি। তাহলে কেন সেগুলো লস করবেন?
যদিও এগুলোকে আপাতদৃষ্টিতে আর্থিক স্বাধীনতার নিয়ম মনে না-ও হতে পারে। তবে আমার ক্ষেত্রে এগুলো কাজ করেছে। তাহলে আসুন, জেনে নিই সেগুলো।
১. যেকোনো মূল্যে চাকরি পাওয়া এড়িয়ে চলুন। পয়সার বিনিময়ে আপনার সময়কে কখনো বিক্রি করবেন না। আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে যে, পরবর্তী জীবন আপনি কারো দাস হবেন কিনা। প্রথম জীবনে আর্থিক দুরাবস্থাকে মেনে নেয়া ভালো। কেননা পরিশেষে এটা আপনাকে লাভবান করবে।
২. ব্যবসায় শুরু করবেন না। গ্রাহক খুঁজে বের করুন। এই মুহূর্তে আপনার আগ্রহের কথা ভুলে যান। গ্রাহকের চাহিদা খুঁজে বের করুন। সে অনুযায়ী কাজ করুন। আপনার প্যাশনকে উপভোগের বিনিময়ে গ্রাহক আপনাকে পয়সা দেবে।
আমার কাছে ব্যবসায়ের সংজ্ঞা ৯৯ শতাংশ মানুষ থেকে আলাদা।আমি ব্যবসায় বলতে বুঝি ‘গ্রাহক’। গ্রাহক মানেই ব্যবসা।
সময়ের অনেক মূ্ল্য। এমন কোনো কাজে সময় নষ্ট করবেন না, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। যার চাহিদা নেই। বরং গ্রাহক খুঁজুন। গ্রাহক হলেন তিনি, যার কোনো সেবা দরকার।
৩. টাকা সঞ্চয় করবেন না। এর পরিবর্তে আপনার উচিত বিনিয়োগ করা। সঞ্চয় হচ্ছে এমন একটি পরিভাষা- যেটা গরিব লোকেরা ব্যবহার করে তাদের টাকা ধনী লোকদেরকে দেয়া বুঝাতে।
বিনিয়োগ সম্পর্কে জানুন। এটা এমন একটি পরিভাষা- যেটাকে ধনী লোকেরা আরো ধনী হওয়ার কাজে ব্যবহার করে।
৪. একটা সিস্টেম বা ব্যবস্থা সেট আপ করুন। সিস্টেম মানে হচ্ছে, গ্রাহককে পণ্য বা সেবা দেয়ার কোনো উপায় বা উপায়সমূহ।
আধুনিককালে অফিসগুলো কোনো সিস্টেম বা ব্যবস্থার অংশ না। এগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে অসুবিধাজনক আমলাতন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা গ্রাহকদের ভয় দেখায়।
৫. পাঠ্যাভ্যাস তৈরির মাধ্যমে নিজেকে শক্তিশালী করুন। আত্মোন্নয়ন হচ্ছে চাবিকাঠি। পড়ুন, পড়ুন, পড়ুন।ব্যবসায়ের বই পড়ুন। বিনিয়োগের বই পড়ুন। ধনী লোকদের জীবনী পড়ুন। উদ্যোগ সম্পর্কিত বই পড়ুন। টিকে থাকার বই ও নির্দেশিকা পড়ুন। দর্শন পড়ুন, গল্পের বই পড়ুন। ইতিহাস পড়ুন। ধনীলোকদের দর্শন পড়ে জানার চেষ্টা করুন, তা কী করেন। তাদের চিন্তাপদ্ধতি বুঝতে চেষ্টা করুন। আপনি আর্থিক স্বাধীনতার খুব কাছাকাছি চলে যাবেন। যেটার বাইরে থাকেন ৯৯ শতাংশ লোকই।
৬. ৯৯ শতাংশ মানুষ যেসময় হলিডে বা অবসর কাটায় তখন কোথাও বেড়াতে যাবেন না। কারণ এই সময় বিমান বা গাড়ির টিকেট, হোটেল ভাড়া সবকিছুর চড়া দাম থাকে। স্পটগুলোও জনাকীর্ণ থাকে।
এর পরিবর্তে সেসময় বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্য বা সেবা বিক্রি করার পথ বের করুন। সবাই যখন ব্যয় করছে তখন, আপনি আয় করুন।
এবার আপনার বেড়ানোর পালা। তখন সবকিছুর ভাড়া কম। স্পটগুলোতেও তেমন ভিড় নেই সস্তা। নিজের পরিবার নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর এক মহাসুযোগ পাবেন তখন।
৭. প্রিয় বন্ধু, পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে।একদল ভোক্তা, আরেকদল সরবরাহকারী। এটা নিশ্চিত করুন যে, আপনি সব সময়ই সরবরাহকারীদের দলে থাকবেন।
৮. খরচের জন্য কখনো ঋণ বা ধার নেবেন না। সবসময় বিনিয়োগের জন্য ধার করুন।
৯. গালগল্প এড়িয়ে চলুন। কারণ এটা শুধু আপনার সময় আর মেধা নষ্ট করবে।
১০. আপনি আপনার বাবা-মা বাছাই করে নিতে পারবেন না। তবে চাইলেই বন্ধু বাছাই করে নিতে পারেন।সুতরাং বেশিরভাগ বন্ধু বাছাই করুন আপনার চেয়ে যার জ্ঞান বেশি এবং আপনাকে বিভিন্ন ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারেন এমন লোককে।
লেখক: ফ্লাভিয়ার মাওয়াসি । বাংলাকরণ: মো. বাকীবিল্লাহ