ইংরেজিতে একটা কথা আছে, The economic structure of a country depends on the banking system of the country. অর্থাৎ ব্যাংক-ব্যবস্থার ওপর একটি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো নির্ভর করে। চাকরির বাজার আর অর্থনীতির বাজার যাই বলি না কেন, ব্যাংক আমাদের দেশে একটি বিশাল ক্ষেত্র। ক্যারিয়ারের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যাংক বর্তমানে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। স্মার্ট ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যাংকে চাকরি করার মানসিকতা একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে। এ পেশায় যেমন আছে সম্মান তেমনি আছে নিরাপদ ভবিষ্যৎ। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মতো সম্মানী আর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তো আছেই।
বিস্তারিত জানাচ্ছেন মারজান ইমু এবং এসএম মাহফুজ।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর বাড়তে থাকে ব্যাংকের সংখ্যা। ১৯৮৩ সালে আসে ইসলামী ব্যাংক। অনেক প্রাইভেট ব্যাংকের আগমনে এ সেক্টরে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। প্রত্যেক বছরই ব্যাংকগুলো শাখা বাড়াচ্ছে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক আরো ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় আগ্রহীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করেছে।
১০-১৫ বছর আগেও তরুণ প্রজন্মের ব্যাংকের প্রতি এতটা ঝোঁক ছিল না। বর্তমানে তরুণরা ব্যাপক হারে ব্যাংকের প্রতি ঝুঁকছে। কারণ এখানে আছে অনেক সুযোগ-সুবিধা, ভালো বেতন আর চাকরির নিরাপত্তা। অন্য দিকে বেশির ভাগ ব্যাংকেই যে কোনো বিষয়ে পাস করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারছে। এর ফলে প্রায় সবাই ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ব্যক্তির যোগ্যতা অনুযায়ী এখানে আছে পদোন্নতি। প্রায় সব ব্যাংকে হয়েছে ডিজিটালাইজেশন। ফলে কষ্টের কাজও কমে গেছে। সব মিলিয়ে আধুনিক দুনিয়ায় আধুনিক ক্যারিয়ারের ক্ষেত্র হলো ব্যাংক।
বাংলাদেশে ব্যাংক
বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৯টি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মধ্যে
– রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংক : সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক
– স্থানীয় কেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ২৪টি। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক অন্যতম।
– বিদেশী ব্যাংক ১২টি। এর মধ্যে আমেরিকান এক্সপ্রেস, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এইচএসবিসি, হাবিব ব্যাংক অন্যতম।
– উন্নয়ন ব্যাংক পাঁচটি। যেমন: কৃষি ব্যাংক, শিল্প ব্যাংক ইত্যাদি এবং অন্য চারটি ব্যাংক হলো- আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, সমবায় ব্যাংক এবং কর্মসংস্থান ব্যাংক।
ব্যাংকের কাজ
ব্যাংকের একটা সংজ্ঞা থেকে এর কাজ সম্পর্কে জানা যায়। ‘ব্যাংক হলো জনগণের এক অংশের কাছ হতে আমানতস্বরূপ অর্থ গ্রহণ এবং গৃহীত অর্থ অন্য অংশকে ঋণস্বরূপ প্রদান করা’। বর্তমানে ব্যাংকগুলো যে কার্যক্রম চালাচ্ছে সে থেকে কয়েকটা বিষয়কে ব্যাংকের মূল কাজ বলা যায়। যেমন :
– আমানত গ্রহণ।
– ঋণ দান।
– চেক প্রচলন।
– বৈদেশিক বাণিজ্য।
এছাড়া আরো অনেক কাজ করলেও এগুলোই প্রধান।
ব্যাংকে কাজের ক্ষেত্র
ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়ার জন্য কাজের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যাংকে প্রধানত চারটি উইং আছে। আধুনিক ব্যাংকের উইংগুলো হলো-
১. অপারেটিং উইং।
২. ইনভেস্টমেন্ট উইং।
৩. ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং উইং।
৪. ইন্টারনাল কান্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স উইং।
অপারেটিং উইং
এ উইং ব্যাংকের কার্যাবলির মূল বিষয়গুলো সম্পাদন করে। এখানে বেশ কিছু বিভাগ কাজ করে থাকে। যেমন-
– আর্থিক প্রশাসন বিভাগ।
– নীতি এবং সাধারণ হিসাব বিভাগ।
– বাজেট এবং খরচ সংরক্ষণ বিভাগ।
– প্রিন্টিং এবং স্টেশনারি বিভাগ।
– তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিভাগ।
– অবকাঠামো বিভাগ।
– সফটওয়্যার বিভাগ।
– বিভিন্ন শাখা তদারকি বিভাগ।
– উন্নয়ন এবং মার্কেটিং বিভাগ ইত্যাদি।
ইনভেস্টমেন্ট উইং
ইনভেস্ট বা বিনিয়োগের কাজই প্রধানত এ উইং করে থাকে। কোথায় কীভাবে বিনিয়োগ করা যায় তা নির্ধারণ করা এর কাজ। এটিও বেশ কিছু বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত।
– ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ভোক্তা বিভাগ।
– সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
– বিনিয়োগ নীতি ও পরিকল্পনা বিভাগ।
– মনিটরিং বিভাগ।
ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং উইং
বৈদেশিক বাণিজ্যের বিষয়টি দেখা এ উইংয়ের প্রধান কাজ। কতগুলো বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত এ উইং।
– বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনা বিভাগ।
– নিযুক্তক (এজেন্সি) এবং প্রতিনিধিত্বশীল (করেসপন্ডিং) ব্যাংকিং বিভাগ।
– গার্মেন্টস বিভাগ।
– রাজস্ব তহবিল ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
– বৈদেশিক রেমিট্যান্স বিভাগ।
ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স উইং
ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি পরিচালনা ও দেখার কাজ করে এ উইং। এটিও কয়েকটি বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত।
– অডিট এবং তত্ত্বাবধান বিভাগ।
– মনিটরিং বিভাগ।
– কমপ্লায়েন্স বিভাগ।
এ ছাড়া সব ব্যাংকে আরেকটি গুরুত্বপূণ উইং থাকে। সেটা হলো- হিউম্যান রিসোর্স উইং।
হিউম্যান রিসোর্স উইং
হিউম্যান রিসোর্স বা মানবসম্পদ উইং ব্যাংকে কর্মরত জনবল এবং নতুন নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি এ উইং দেখে। এর কয়েকটি বিভাগ হলো-
– অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড পারসোনেল প্লানিং বিভাগ।
– ডিসিপ্লিন অ্যান্ড আপিল বিভাগ।
– স্টাফ ওয়েলফেয়ার ট্রেনিং বিভাগ।
এ ছাড়া আরো কিছু বিভাগ আছে। যেমন-
– এসএমই সার্ভিস।
– শেয়ার বিভাগ।
– আইন বিভাগ।
– ব্যাংক ফাউন্ডেশন (যেমন- ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন)
ব্যাংকে নিয়োগ
ওপরে আলোচিত প্রত্যেকটি উইংয়ের প্রত্যেকটি বিভাগে প্রায়ই নতুন জনবল নিয়োগ করতে হয়। এসব বিভাগের মাধ্যমে ব্যাংকের গোটা বিষয় পরিচালিত হয়। ব্যাংকগুলো নতুন জনবল সাধারণত বিভাগভিত্তিক নিয়োগ না দিয়ে, কয়েকটি ক্যাটাগরিতে নিয়োগ দিয়ে থাকে। সেগুলো হচ্ছে- প্রবেশনারি অফিসার (কোথাও সিনিয়র অফিসার), সহকারী অফিসার, অফিসার ক্যাশ, ফিল্ড অফিসার ইত্যাদি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংকই এসব পদে জনবল প্রত্যেক বছরই নিয়োগ দিয়ে থাকে। ব্যাংকগুলোর শাখা বাড়ে, প্রয়োজন হয় নতুন জনশক্তি। এসব পদে সাধারণত বিশেষ কোনো যোগ্যতা চাওয়া হয় না। কিন্তু এর বাইরেও বিশেষ কিছু নিয়োগ হয়ে থাকে। যেমন- আইনজীবী, টেকনিক্যাল কাজের জন্য প্রযুক্তি কর্মকর্তা, ব্যাংকের ফাউন্ডেশনগুলোর কমকর্তা এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী।
প্রধান দুই পদে যোগ্যতা ও সম্মানী
১. প্রবেশনারি অফিসার (সিনিয়র অফিসার)
প্রবেশনারি অফিসার বা সিনিয়র অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য একেক ব্যাংক একেক যোগ্যতা চেয়ে থাকে। তবে মূল বিষয়গুলো একই। যেমন- ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ পদের জন্য নির্দিষ্ট পয়েন্ট লাগে। মাস্টার্স ডিগ্রীধারীকে ৯ পয়েন্ট পেতে হয়। অনার্সের জন্য অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো হলো- ফিন্যান্স, ব্যাংকিং, অ্যাকাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, ইংরেজি, অর্থনীতি, গণিত অথবা বিআইবিএম থেকে করা এমবিএম। তবে অন্যান্য বিভাগের লোকদেরও আবেদন করার সুযোগ আছে।
এ ক্ষেত্রে প্রার্থীর এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ বা গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫০ অনার্সে প্রথম বিভাগ বা জিপিএ ৩.০০-এর মান হলো ৩ পয়েন্ট। এগুলোর দ্বিতীয় বিভাগ হলো ২ পয়েন্ট।
প্রবেশনারি বা সিনিয়র অফিসার হিসাবে প্রাথমিক বেতন ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা, অভিজ্ঞতার সাথে সাথে এ পরিমাণ বাড়বে।
২. সহকারী অফিসার
এটি ইসলামী ব্যাংকের অফিসার গ্রেড-৩, অন্যান্য ব্যাংকে অফিসার। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীর মাস্টার্স ডিগ্রি আবশ্যক নয়। অনার্স বা ডিগ্রি পাস করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন। এ পদের জন্য ইসলামী ব্যাংকে ৬ পয়েন্ট দরকার। তবে মূল বিষয় হলো- জীবনের সব পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ অথবা দ্বিতীয় বিভাগ থাকতে হবে। যে কোনো একটিতেও তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। এ পদে ব্যাংক অনুযায়ী সম্মানীর পার্থক্য থাকলেও মোটামুটি প্রাথমিক অবস্থায় বেতন ১১ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। চাকরির দুই বছর পর থেকে এ পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়বে।
অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা
ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে মূল বেতনের পাশাপাশি আর কিছু সুযোগ সুবিধাও রয়েছে। সেগুলো হলো-
– প্রত্যেক কর্মদিবসে খাবারের জন্য ভাতা।
– বছরে দু’টি আনুষ্ঠানিক ভাতা।
– লভ্যাংশে বোনাস বছরে প্রায় দুই-তিনটি।
– চাকরিজীবী ঋণ, কম্পিউটার ঋণ, ঘর-বাড়ি তৈরির ঋণ ইত্যাদি।
আবার ব্যাংকের চাকরি শেষ হয়ে গেলে বিভিন্ন প্রকল্প, প্রাইভেট কোম্পানি এবং বিভিন্ন ব্যাংকেও চাকরির সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বৈদেশিক ব্যাংকগুলোর অন্যান্য দেশেও শাখা আছে। ভালো পারফরম্যান্সের ওপর যে কোনো দেশে চাকরি হয়ে যেতে পারে। ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে দু-এক বছর পর প্রার্থীর নির্দিষ্ট বেতন অভিজ্ঞতানুযায়ী বাড়তে থাকে।
এক নজরে দেখে নিন লুকিয়ে রাখুনসাক্ষাৎকার
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান
ব্যাংকিং বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়এ পর্যন্ত যতগুলো নিয়োগ পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট থেকেছি আমার কাছে মনে হয়েছে একমাত্র ব্যাংকে নিয়োগের সময় তদ্বির হয় না বা রাখা হয় না। এখানে যোগ্যতাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে কেউ কোনো একটি বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় টেকেন না। এর কারণ সব বিষয়ে ভালো না করা।
লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত সাম্প্রতিক বিষয়ে রচনা লিখতে বলা হয়। এর উত্তরের মধ্যে দিয়ে প্রার্থীর সাধারণ জ্ঞান এবং বিশ্লেষণ ক্ষমতা যাচাই করা হয়।
প্রতিটি ব্যাংকই স্মার্ট লোক চায়। তাই মৌখিক পরীক্ষায় কীভাবে রুমে ঢুকলো, চেয়ারে বসল, কীভাবে প্রশ্নের উত্তর দিলো সবই ভালোভাবে লক্ষ্য করা হয়।
চাকরির প্রস্তুতি
সাধারণত ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ), ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, অর্থনীতি বিভাগ ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)। পরীক্ষার সময় এক থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। কোনো কোনো ব্যাংকের প্রশ্ন চার পাঁচটি বিষয়ে থাকে। আবার কিছু ব্যাংকে তিনটি বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয়। প্রস্তুতি নেবার সময় সব বিষয়ই জানা থাকতে হবে। আর ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হতে চাইলে অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। অন্তত পাঁচ-ছয় মাস সময় নিয়ে তৈরি হতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
সাধারণত ব্যাংকের শুরুর পদগুলো হয়ে থাকে প্রবেশনারি অফিসার/ ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার, অফিসার/ জুনিয়র অফিসার/ অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার ইত্যাদি। কিছু পদের জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটরাই আবেদন করতে পারবে। কর্মাস থেকে যারা পাশ করেছেন, তাদের সাধারণত নিয়োগ দেয়া হয় ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশন, ক্রেডিট অ্যাডমিনিষ্ট্র্রেশন, ফরেন এক্সচেঞ্জ, রেমিট্যান্স ডিভিশন, জেনারেল ব্যাংকিং, এইচআর ইত্যাদি বিভাগে।
পরীক্ষাপদ্ধতি
ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষাগুলোতে ব্যাংকভেদে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও প্রশ্নের ধরন প্রায় একই হয়ে থাকে। নিয়োগ পরীক্ষায় সাধারণত ১০০ নম্বরের প্রশ্ন হয়। প্রায় সব ব্যাংকেই এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষা হয়। এমসিকিউ অংশের প্রশ্ন হয় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, কম্পিউটার, অ্যানালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটি, পাজলস এবং ডাটা সাফিশিয়েন্সি থেকে। আর লিখিত বা বর্ণনামূলক পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে গণিত, ইংরেজি ও অ্যানালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটি থেকে। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রশ্ন একটু ব্যতিক্রম হয়ে থাকে। প্রশ্নে উল্লিখিত বিষয় ছাড়াও ইসলামী সংস্কৃতি ও অর্থব্যবস্থার ওপর বেশ কিছু প্রশ্ন থাকে। সরকারি এবং ইসলামী ব্যাংক ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোর প্রশ্ন করা হয় সাধারণত ইংরেজিতে। পরীক্ষার সময় ও নাম্বার বণ্টনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়।
বাংলা
বাংলা বিষয়ক প্রশ্নগুলো করা হয় সাধারণত ব্যাকরণ এবং সাহিত্য থেকে। ব্যাকরণ অংশে ভাষা, বর্ণ, শব্দ, বাক্য, সন্ধি বিচ্ছেদ, লিঙ্গান্তর, বচন, বানান শুদ্ধি, কারক ও বিভক্তি, সমাস, পদ, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, বাগধারা, এক কথায় প্রকাশ, অনুবাদ, অর্থনীতি বিষয়ক প্রবন্ধ প্রভৃতি থেকে প্রশ্ন করা হয়। এছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎপত্তি ও বিকাশ, বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকের জীবনী, কর্ম, সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য ঘটনা, চরিত্র ও উক্তি, বিখ্যাত পত্রপত্রিকার সম্পাদক প্রভৃতি বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়।
ইংরেজি
চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগ পরীক্ষায় ইংরেজিতে বেশি ভুল করেন বলে এ বিষয়ে বিশেষ প্রস্তুতি থাকতে হবে। বিশেষ করে খLetter, Word, Sentence, Parts of Speech, Voice, Narration, Phrase and Idioms, Correction, Number, Gender, Person, Completing Sentence, Correct Spelling, Synonym, Antonym, Preposition প্রভৃতি ভালোভাবে শিখতে হবে। এছাড়া বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম, রচয়িতা, কবি সাহিত্যিকদের জীবনী ও সৃষ্টিকর্ম, বিভিন্ন কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং নাটকের চরিত্র ও বিশেষ উক্তিগুলো সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে।
গণিত
নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতে অনেকের মধ্যে গণিতভীতি কাজ করে। এই ভয় কাটানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিয়মিত অনুশীলন। ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষায় গণিত অংশে ভালো করতে গড়, গতি, অনুপাত, শতকরা, পরিমাপ ও একক, সুদকষা, লাভক্ষতি এবং পরিমিতির জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান ভালোভাবে শিখতে হবে। পাশাপাশি লসাগু-গসাগু, ঐকিক নিয়ম, বর্গ, সরল, মাণ নির্ণয়, সাধারণ চার নিয়ম, সামন্তধারা নির্ণয়, সমাধান এবং জ্যামিতিক সূত্র ও সংজ্ঞাগুলো শিখতে এবং চর্চা করতে হবে।
সাধারণ জ্ঞান
সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে। বাংলাদেশ বিষয়ক প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে ভৌগলিক বিষয়াবলি, আয়তন, সীমানা, নদ-নদী, কৃষিজ, বনজ, প্রাণীজ ও খনিজ সম্পদ , বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ, শিল্প ও বাণিজ্য, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান, পুরস্কার ও সম্মাননা, অর্থনৈতিক ঘটনাবলি জানতে হবে। এছাড়া সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি, বিশ্ব রাজনীতি, মহাদেশ, দেশ ও জাতি, সীামারেখা ও স্থান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন, চুক্তি, সনদ, বিশ্ব অর্থনীতি, শিল্প ও বাণিজ্য, খেলাধুলা, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, বিখ্যাত স্থান ও স্থাপনা বিষয়ে জ্ঞান রাখতে হবে।
দৈনন্দিন বিজ্ঞান ও কম্পিউটার
ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষায় বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয় দৈনন্দিন বিজ্ঞান ও কম্পিউটার বিষয়ে। প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কার ও আবিষ্কারক, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, তাপ, আলো, বিদ্যুৎ, শব্দ, চুম্বক, মানবদেহ, উদ্ভিদ ও প্রাণিবিদ্যা, খাদ্য ও পুষ্টি, চিকিৎসা বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, ভূগোল, প্রাকৃতিক ভূগোল, খনিজ ও মৃত্তিকা, বায়ুমণ্ডল, যন্ত্রবিদ্যা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স এবং কম্পিউটার সম্পর্কিত তথ্যগুলো জানা থাকতে হবে।
অ্যানলিটিক্যাল অ্যাবিলিটি, পাজলস, ডাটা সাফিশিয়েন্সি
ব্যাংকার্স রিক্রুটমেস্ট পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর বুদ্ধিমত্তা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়। নিজের বুদ্ধিমত্তা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিষয়গুলোর উত্তর করতে হবে। বিষয়টি বেশ কঠিন। তবে অফিসিয়াল জিম্যাট, ব্যারনস জিম্যাট কিংবা আইকিউ টেস্টের যে কোনো বই দেখে নিয়মিত চর্চা করলে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া সহজ হবে।
ইসলামী জ্ঞান
ইসলামী শরীয়াহ্ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রায় ২৫-৩০ নম্বরের প্রশ্ন করা হয় ইসলামী জ্ঞান বিষয়ক। তাই ইসলামী শরীয়াহ্ভিত্তিক ব্যাংকে যারা চাকরি করতে চান তাদের অন্যান্য বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলামী জ্ঞানও রাখতে হবে। বিশেষ করে আকাইদ, শরীয়ত, আখলাক, পবিত্রতা, নবী-রাসুল ও সাহাবীদের জীবনী, ইসলামী সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রব্যবস্থা, ইসলামী অর্থব্যবস্থা, ইসলামী গ্রন্থ ও গ্রন্থাকার, কোরআন ও হাদিস, মুসলিম কবি, দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের জীবনী ও কর্ম, জিহাদ, আন্দোলন ও সংগঠন প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে।
মৌখিক পরীক্ষা
আপনি যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন, সে বিষয়ে ভাইভায় আপনাকে প্রশ্ন করা হতে পারে। তাই আপনার গ্রাজুয়েশনের বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, দেশের মুদ্রানীতি, পুঁজিবাজার, চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা, দেশের বাজেট, কৃষি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়েও প্রশ্ন করা হতে পারে। ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক টার্মসমূহ আপনাকে জানতে হবে। এ বিষয়ে যে বই আপনার সহায়ক হতে পারে তা হচ্ছে- ১. অর্থ ও বাণিজ্য শব্দকোষ : মুনীর তৌসিফ, ২. অক্সফোর্ড ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ডিকশনারি ইত্যাদি। এছাড়া ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের অর্থনীতি বইটি দেখতে পারেন।
পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ
ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চালু আছে। ব্যাংকিং অথবা ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট নামে এ বিষয়ে ব্যবসায় অনুষদ থেকে ডিগ্রি নেয়া যায়। এছাড়া আছে বিভিন্ন ইনস্টিটিউট। এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
বিআইবিএমের এমবিএম কোর্স
ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মাস্টার্স অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (এমবিএম) কোর্সের বাড়তি কদর রয়েছে। সাধারণ এমবিএ করার চেয়ে এমবিএম ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে এগিয়ে রাখবে। যে কোনো বিষয়ে স্নাতক উত্তীর্ণরা এখানে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে একটি প্রথম বিভাগ থাকতে হবে এবং কোনো তৃতীয় বিভাগ থাকতে পারবে না। আবেদনের পর প্রার্থীকে দেড় ঘণ্টার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এর মধ্যে ৩০ মিনিট এমসিকিউ এবং ৬০ মিনিট লিখিত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল থেকে প্রথম ২০০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রথম ৫০ জনকে ভর্তি করা হবে।
৩২ মাসের কোর্সটিতে ৭২ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে। এর মধ্যে কোর্স ওয়ার্ক, প্রজেক্ট পেপার ও মৌখিক পরীক্ষা রয়েছে। বছরে দু’বার ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। মে মাসে হয় ইভিনিং প্রোগ্রাম এবং জানুয়ারি মাসে ডে প্রোগ্রাম। কোর্সটি সম্পন্ন করতে অনাবাসিক প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অ্যাডমিশন ফি, টার্ম ফি, সেন্টার ফি ইত্যাদি বাবদ প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা খরচ হবে। আবাসিক প্রার্থীদের অতিরিক্ত সিট ভাড়া ও খাবার খরচ দিতে হবে।
যোগাযোগ-
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট
প্লট : ৪, রোড : ১, সেকশন : ২
মিরপুর, ঢাকা।
ফোন : ৯০০৩০৩১, ৯০০৩০৫১-২
ওয়েব : www.bibm.org.bd
ডিপ্লোমা ইন ব্যাংকিং
দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য ডিপ্লোমা কোর্স পরিচালনাকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (আইবিবি)। পেশাজীবনে পদোন্নতি ও বেতন বাড়াতে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা খুবই জরুরি। ব্যাংকিং ডিপ্লোমা কোর্সটি জুনিয়র অ্যাসোসিয়েট অব দ্য ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ এবং ডিপ্লোমায়েড অ্যাসোসিয়েট অব দ্য ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ- এ দুটি কোর্সে বিভক্ত। ব্যাংক কর্মীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ প্রতিষ্ঠানটি কোর্স শেষ করার জন্য আট বছর সময় দিয়েছে। রেজিষ্ট্রেশন করার পর প্রথম কোর্স চার বছর এবং দ্বিতীয় কোর্স চার বছরের। বছরে দুই বার (মে ও নভেম্বর) ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষার এক থেকে দেড় মাস আগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আগ্রহী প্রার্থীরা ঢাকার অধিবাসী হলে ইনস্টিটিউটের কার্যালয় থেকে এবং চট্টগ্রাম, সিলেট, বগুড়া, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুর জেলার পরীক্ষার্থীরা ওই জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যালয় থেকে এবং অন্য জেলার প্রার্থীরা নিজ নিজ জেলার সদরে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকে প্রধান অফিস, আঞ্চলিক কার্যালয় অথবা প্রধান শাখা থেকে পরীক্ষার এন্ট্রি ফরম, সিলেবাস, ইত্যাদি নগদ টাকা দিয়ে সংগ্রহ করতে পারবেন।
জুনিয়র অ্যাসোসিয়েট অব দ্য ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ এবং ডিপ্লোমায়েড অ্যাসোসিয়েট অব দ্য ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ এ দুটি কোর্সের প্রতিটিতে প্রথমবার মোট এক হাজার টাকা লাগবে। এ ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক কোনো টাকা প্রদানের প্রয়োজন নেই। তবে কোনো বিষয়ে অকৃতকার্য হলে পরের বছর প্রতিটি বিষয়ের জন্য ৩০০ টাকা করে লাগবে। এসবের বাইরে তেমন কোনো খরচ নেই বললেই চলে।
যোগাযোগ
দ্য ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (আইবিবি)
বিএসআরএস ভবন (দশম তলা)
১২ কাওরান বাজার
ঢাকা-১২১৫
ফোন : ৯১৩৭২৮২, ৯১৩৭২৮৩
ওয়েব : www.ibb.org.bd
সাক্ষাৎকার
সুদর্শন শাঁখারী
সিনিয়র অফিসার
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড
ব্যাংকে চাকরি করা অনেকেরই স্বপ্ন। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাটাও বেশ কঠিন। তাই পরীক্ষা দেয়ার আগে ভালো প্রস্তুতি থাকতে হবে। প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো ব্যাংকে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থাকে। ব্যাংকের নির্দিষ্ট নিয়মে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করতে বলা হলে, অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিয়ে নির্ভুলভাবে ফরম পূরণ করতে হবে। মেধা থাকলে নিয়োগ পাওয়া সহজ। যে কোনো বিষয়ের প্রার্থীরাই আবেদন করতে পারেন। তবে কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। আর প্রথম থেকেই ব্যাংকে চাকরির লক্ষ্য থাকলে সাধারণ এমবিএ না করে এমবিএম করা যেতে পারে। আর যোগ্যতা থাকলে দ্রুত পদোন্নতিও পাওয়া যায়।
অনলাইন কোর্স
ফিন্যান্স অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (এফআইটি)
এ কোর্সটি মূলত ব্যাংকার, ইন্স্যুরেন্সসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যারা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, চুক্তি, বিক্রয়, আমদানি-রফতানি ও বাণিজ্য উন্নয়ন বিভাগে কর্মরত তাদের জন্য আয়োজন করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি ও পদোন্নতি পেতে কোর্সটি করতে পারেন। কোর্সটি সম্পন্ন করতে সময় লাগে দুই মাস। অনলাইনে সর্বমোট ৪০ ঘণ্টা ক্লাস হবে। যেহেতু কোর্সটি চাকুরিজীবীদের জন্য তাই ক্লাস সাধারণত সন্ধ্যায় হয়। বছরে মার্চ ও সেপ্টেম্বর দুটি সেশনে ভর্তি হওয়া যায়। খরচ লাগবে মোট ৪৫০ ইউরো।
সার্টিফিকেট ডকুমেন্টারি ক্রেডিট স্পেশালিস্ট (সিডিসিএস)
আন্তর্জাতিকভাবে কোর্সটি গ্রহণযোগ্য। এ কোর্সের জন্য কোনো কোচিং করানো হয় না। তবে পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ওরিয়েন্টেশন ক্লাস নেয়া হয়। প্রতিবছর এপ্রিল মাসে অনলাইনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এ কোর্সের পরীক্ষা শেষে একজন ব্যাংককর্মী পাবেন বিশ্বব্যাপী কাজ করার বৈধতা। এছাড়া দেশে যে কোনো ব্যাংকে নিয়োগে বাড়তি সুবিধা তো পাবেনই। কোর্স সফলভাবে শেষ করলে ইনস্টিটিউট অব এক্সপোর্ট-ইউকে এবং আইসিসি বাংলাদেশ এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
এফআইটি ও সিডিসিএস কোর্স সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন নিচের ঠিকানায়।
চন্দ্রশীলা সুবাস্তু টাওয়ার
৬৯/১ পান্থপথ, ঢাকা।
ফোন : ৮৬২১৯৪২, ৯৬৭৬৬৯৮
সাক্ষাৎকার
জসীম উদ্দিন
অফিসার
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক
ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি কম্পিউটার দক্ষতা, সুন্দর ইংরেজিতে কথা বলা এবং উপস্থিত বুদ্ধি থাকতে হবে। আবেদনের পর এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রতিদিন সময় বের করে চর্চা করতে হবে। প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা পেতে বিগত সময়ের প্রশ্নগুলো নিজে নিজে সমাধান করতে হবে। বাজারে বিগত বছরের প্রশ্নসম্বলিত বেশ কিছু বই পাওয়া যায়। সেগুলো নিয়মিত চর্চা করলেই প্রস্তুতির ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়ে যায়। ব্যাংকগুলোর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতিনিয়তই নতুন নতুন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ জন্য নিয়মিত দৈনিক ও মাসিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে।