চাকরির আগে ইন্টার্নশিপ

সুমনা শারমিন

একজন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন বা পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশনের সময় যে বিষয়গুলো মেজর হিসেবে অধ্যয়ন করেছেন, তার প্র্যাকটিক্যাল প্রতিফলন হয় ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে। এ জন্য ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে ভালো একটি চাকরির আশা করতেই পারেন। চাকরির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সেসব কর্মীকে পছন্দ করে, যারা যেকোনো অবস্থায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারেন। সুতরাং আপনাকে প্রমাণ করতে হবে, আপনি ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য কিছু করতে পারবেন। শুধু কাজের মাধ্যমে আপনি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের আস্থাভাজন হতে পারবেন না, আপনাকে বাড়তি উদ্যোগও নিতে হবে।

কাজের ক্ষেত্র
সব ধরনের প্রতিষ্ঠানই শিক্ষানবিসদের ইন্টার্নশিপের জন্য কিছু-না-কিছু ব্যয় করে থাকে। সুতরাং তারা শিক্ষানবিসদের দিয়ে কিছু বাড়তি কাজ করিয়ে নিয়ে থাকে। এগুলো সুকৌশলে পালন করা শিক্ষানবিসদের কর্তব্য। এতে বিরক্ত না হয়ে কাজগুলো শেখার মানসিকতা নিয়েই ইতিবাচকভাবে করা প্রয়োজন।

ইন্টার্নশিপের জন্য করণীয়
ইন্টার্নশিপে শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি বিষয়ে মনোনিবেশ করতে হয়। আর এ ব্যাপারগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামকে সফল বলা হয়। কিছু কিছু ইন্টার্নশিপ আছে, যেগুলো আসলেই স্ট্রাকচারড। সুতরাং ইন্টার্নশিপ শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের উচিত কোন এরিয়ায় সে দক্ষতা অর্জন করতে চায়, নতুন কী আয়ত্ত করতে চায় বা কিভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায় তা নির্ধারণ করে ফেলা। তবে মনে রাখবেন, এমন কিছু আশা করবেন না, যা অর্জন করা অসম্ভব।

নিজেকে প্রকাশ করুন
প্রতিটি ইন্টার্নশিপ মূলত একটি নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্ট, সুপারভাইজার ও শিক্ষানবিসদের চক্রে আবদ্ধ থাকে। এগুলোর বাইরে নিজেকে কোম্পানির মিটিং, অন্য ডিপার্টমেন্টের কর্মীদের সাথে যোগাযোগ এবং কোম্পানির সোস্যাল ইভেন্টে অংশ নিতে হবে। নিজের আইডিয়া যত বেশি অন্যদের সাথে শেয়ার করা যায় তত বেশি শেখা যায়। ইন্টার্নশিপের সময় নির্দিষ্ট একজনের অধীনে বা তত্ত্বাবধানে ইন্টার্নশিপ করতে হয়। সেই তত্ত্বাবধায়ক বা সুপারভাইজারের সাথে সদ্ভাব রাখতে হবে। যেকোনো আইডিয়া শেয়ারিংয়ে সুপারভাইজারের সাথে আলোচনা করা উচিত। এতে করে শিক্ষানবিস ও সুপারভাইজারের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং অনেক বেশি শেখা যায়। আপনি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি মিটিং, ওয়ার্কশপ, কনফারেন্স, ইভেন্টে নিয়মিত অংশ নিতে পারেন। এতে করে প্রতিষ্ঠানের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে ভালো করে জানতে পারবেন। মিটিং অনেক সময় আপনার জন্য বোরিং লাগতে পারে। মনে রাখবেন একসময় এসব মিটিং আপনার জন্য আশীর্বাদই হয়ে উঠতে পারে।

সচেতন থাকুন
একজন ইন্টার্নির জন্য নেতিবাচক মনোভাব তার সমস্ত কর্মতৎপরতাকে বানচাল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। সুতরাং কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করা, রূঢ় আচরণ, সহযোগীদের সাথে অশ্রদ্ধাশীল ব্যবহার, দেরি করে অফিসে আসা, তাড়াতাড়ি অফিস ত্যাগ করা, ডেটলাইন মিস, অফিস পলিসি না মানা- এগুলো নিজের জন্য ক্ষতিকর বলেই স্বীকৃত।

প্রশ্ন করুন
সব সময় মনে রাখতে হবে, ইন্টার্নশিপ হলো একটি লার্নিং প্রসেস। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বা কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যে ধরনের কাজ আপনার কাছ থেকে আশা করছে, সে বিষয়ে আপনার কোনো ধারণা না থাকলে পরিষ্কার করে তা বুঝে নেয়ার চেষ্টা কর”ন। এ জন্য প্রশ্ন করতে সঙ্কোচ বোধ করবেন না।

উপভোগ করুন
ইন্টার্নশিপে আপনাকে শিখতে হবে। এখানকার অভিজ্ঞতা আপনার চাকরির জন্য বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে। শেখার পাশাপাশি ইন্টার্নশিপের সময় উপভোগ করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার কাজের প্রেসার অনেক কম মনে হবে।

নেটওয়ার্ক
চাকরি পাওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় টুল হলো নেটওয়ার্ক। যার নেটওয়ার্ক যত বেশি বড়, তার চাকরিও মেলে তত দ্রুত। তাই ইন্টার্নশিপের সময় সুপারভাইজারসহ সবার সাথেই ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top