ফারসিন বিনতে সুলতান : যিনি যে পেশায় থাকুন না কেন, সময়ের ফেরে সবাইকেই অতিরিক্ত কাজের চাপ সহ্য করতে হয়। অনেক সময় এই চাপ মানসিক থেকে শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। মাত্র ৫টি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারলে, আপনি খুব সহজেই পারবেন সুস্থ দৈনন্দিন জীবন যাপন করতে। আসুন মানসিক চাপ কমানোর উপায় জেনে নিই।
মানসিক চাপ কমানোর ৫ উপায়
এক. ইমেইল নয়, হোক একটি ফোন কল
কর্মক্ষেত্রে আজকাল ইমেইল অনেক জনপ্রিয় হলেও চেষ্টা করুন একটি ফোন করার। বড় একটি মেইল করে সময় নষ্ট না করে যদি ফোন করে কাজ করা যায় তাহলে মন্দ কি? ভাবুন তো – কোন কাজটি সবচেয়ে ভালো প্রভাব ফেলবে এবং আপনার জন্য সহজ হবে। আর ইমেইল করার আগে আপনি বুঝে নিন, কারো সাথে ফোনে সরাসরি কথা বলে আপনি যেমন সাড়া পাবেন তা কি ইমেইলে পাবেন? তাছাড়া আপনার কাজটিও দ্রুত শেষ হবে। ইমেইলের উত্তরের জন্য দেরি করতে হবে না।
দুই. নিজের সাথে কিছুটা সময় কাটান
কোন দিন কখন কী কাজ করবেন তার জন্য যেমন ডায়েরিতে সময় তারিখ লিখে রাখেন অথবা মোবাইল ফোনে রিমাইন্ডার দিয়ে রাখেন ঠিক তেমন করে নিজের জন্য দিনে কিছুটা সময় রাখুন। নিজেকে সময় দিন। নিজের ভালো লাগার কাজ বেছে নিন। যা আপনার মানসিক চিন্তা, দুঃখ, হতাশাকে কিছু সময়ের জন্য হলেও দূরে রাখতে সহায়তা করে। নিজেকে সব কাজের থেকে দূরে রাখুন। এ সময় আপনি বুঝতে পারবেন – আপনার জন্য কোন বিষয় অগ্রাধিকার পাবে।
তিন. সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছেন কিসে?
দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক কাজ করে থাকি। এমন কি মাঝে মাঝে দেখা যায়, যেখানে বেশি সময় দেয়া উচিত তা না করে অন্য কাজে বেশি সময় নষ্ট হয়ে যায়। আবার এমন হয় আমরা কোন কাজের গুরুত্ব কতটুকু তা বুঝে উঠতে পারি না। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের খেয়াল করতে হবে, আমরা কোন ক্ষেত্রে কতটুকু সময় দিচ্ছি। আমাদের কাজের তালিকা করে রাখতে হবে এবং সেই তালিকা থেকে গুরুত্ব আর চাহিদা বুঝে সময় ব্যয় করতে হবে। নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে- আমি যে কাজে সময় দিচ্ছি তা কি আসলেই ফল দিচ্ছে? নাকি অযথাই সময় অপচয় করছি? সময় নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে পারলে অনেক সময় আমাদের হাতে থেকে যায়।
চার. মনযোগে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী জিনিস এড়িয়ে চলুন
আমাদের মাঝে অনেকেরই অভ্যাস আছে, কম্পিউটারে কাজ করার সময় একসাথে অনেকগুলো ট্যাব চালু রাখার। ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি যদি চালু থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে মনোযোগ কাজ থেকে সরে গিয়ে সেসব জায়গায় চলে যাবে। তাই কাজের মাঝে এসব থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়। আমাদের মনযোগ ও চেষ্টা সঠিক উপায়ে দিতে পারলে কাজ সহজ ও সময় অপচয় রোধ হতে পারে। তাই, এখন থেকে অফিসে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার শুধুমাত্র অফিসিয়াল কাজে ব্যবহার হোক। আর মনোযোগটাও কাজের দিকে দেয়া হোক।
পাঁচ. বিরতি নিন, ডেস্ক থেকে উঠে হেঁটে আসুন
কথাটি শুনতে অবাক মনে হলেও, বাস্তবতা হলো- আমাদের নিয়মিত কাজ থেকে বিরতি নিতে হয়। বিজ্ঞানিরা পরীক্ষা করে দেখেছেন একটানা বসে কাজ করা শরীরের জন্য একেবারে অনুচিত। মেরুদণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা, চাপ অনুভব করা, হাত-পা ধরে আসা, চোখে সমস্যা ইত্যাদি সবই টানা কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল। তাই কাজের মাঝে নিন হালকা বিরতি। হেটে আসুন দুই-এক কদম। কাজের মাঝে বিরতি কাজের ক্ষতি নয়। বরং কাজে আর ভালো করে মনযোগ দেয়ার জন্য জরুরি। এভাবে মানসিক অবসাদ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। একঘেয়েমি থেকে কিছুটা বিরতি পাওয়া যায়।
আমদের কর্মজীবন অনেক অসুবিধা, ক্লান্তিকর আর ঝামেলায় আবদ্ধ। কিন্তু তাই বলে কাজের জন্য নিজের শরীরের অবহেলা করা ঠিক নয়। নিজের আনন্দ নিজের হাতে। আপনি সুস্থতার মাঝে কাজ করে যেতে পারেন। শুধু প্রয়োজন, নিজের ইচ্ছাশক্তির। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত না হতে চেষ্টা চালিয়ে যান। শুভ কামনা আপনার জন্য।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
খুব উপকারী একটি আর্টিকেল। “বিরতি নিন, ডেস্ক থেকে উঠে হেঁটে আসুন” এই টিপসটা অনেক কার্যকরী।
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আপনার জন্য শুভ কামনা।