মেহজাবীন মুনীরা : দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া আজব কিছু বিষয়ের যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা সত্যি মনটা ভালো করে দেয়। এমনি সুন্দর একটি বিষয় তুলে ধরেছেন ব্রাজিলের বিখ্যাত লেখক Paulo Coelho তার 30 Sec Reading: why do we shout in anger? লেখায়।
এক শিক্ষক ছাত্রদের কাছে জানতে চাইলেন- “তোমরা কি বলতে পারো, আমরা বেশি রেগে গেলে চিৎকার করি কেন?”
একজন ছাত্র উত্তর দিলো- “কারণ রেগে গেলে আমরা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাই তাই একটা পর্যায়ে চিৎকার করে ফেলি।”
“কিন্তু আমরা যার উপর রাগ করি সেই মানুষটি তো আমাদের সামনেই থাকে তবুও কেন আমরা চেঁচিয়ে তার সাথে কথা বলি? নরম স্বরে, আস্তে কথা বললেও তো সে শুনতে পাবে। তাই না?” -ছাত্ররা অনেক চিন্তা করেও শিক্ষকের এই প্রশ্নের কোন সঠিক জবাব খুঁজে পেল না।
তখন শিক্ষক ব্যাখা করলেন- “দুটো মানুষ যখন একে অপরের উপর রেগে যায় তখন তারা একে অন্যের অন্তর থেকে দূরে সরে যায়। এই রাগ তাদের অন্তরের মাঝেও দূরত্ব সৃষ্টি করে। সেই দূরত্ব একটু একটু করে যত বাড়তে থাকে ততই তাদের রাগ বা ক্রোধ বেড়ে যায় এবং তখন তাদেরকে আরও চিৎকার করতে হয়, আরও জোরে তর্ক করতে হয়।”
“আবার যদি আমরা ভেবে দেখি, দুজন মানুষ যখন একে অন্যের প্রেমে পড়ে বা ভালোবাসে তখন কী হয়? তখন ভালোবাসার বন্ধনে থাকা মানুষ দুটি একে অন্যের সাথে ধীরে ধীরে নরম স্বরে, আবেগ নিয়ে কথা বলে। কারণ যারা ভালোবাসে তারা একে অন্যের অন্তরের খুব কাছে থাকে। আর যারা অন্তরের কাছে থাকে তাদের কথা শুনতে হলে চিৎকার করার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি শুধুমাত্র ফিস্ ফিস্ করেও তারা তখন কথা বলতে পারে।”
“যারা আরও বেশি গভীরভাবে একে অন্যকে অনুভব করতে পারে, ভালোবাসতে পারে তখন কী হয় তা কি আমরা জানি? অদ্ভুত সুন্দর ব্যাপার হলো, তাদের তখন ফিস্ ফিস্ করেও কথা বলতে হয় না। তারা দুজন যখন একে অন্যের চোখের দিকে তাকায় তখনই অন্তরের অনুভূতি, কথা, শব্দমালা সব অনুভব করে ফেলতে পারে। কারণ তখন তাদের অন্তর তাদেরকে এক করে ফেলে। তাদের কথা হয় তখন অন্তরে অন্তরে।”