ছবিতে দেয়া কোণটির দিকে একটু লক্ষ করুন। দুটো সরলরেখা একটি বিন্দুতে মিলিত হয়ে এই সুক্ষ্মকোন উৎপন্ন করেছে। ব্যাপারটাকে যদি এভাবে দেখি রেখা দুটো যেখানে মিলিত হয়েছে, সেই স্থান থেকে যত ডানদিকে গেছে রেখা দুটোর মধ্যকার দুরত্ব তত বেড়েছে। এভাবে বাড়তে বাড়তে এমন একটা অবস্থায় পৌছাবে যখন একটি রেখা কখনই আরেকটি রেখার নাগাল পাবে না।
এই ব্যাপারটা থেকে আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। একই ক্লাসে পড়া সমমেধার আপনি যখন এরতোগ্রুল, জিওটি, পাবজি, আইপিএল, সিএল, লা লিগা নিয়ে কাটাচ্ছেন, তখনই আপনার আরেক বন্ধু কী সুন্দর তার অবসরগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে নিজের স্কিল ডেভেলপ করে।
পাঁচ বছর ভার্সিটি লাইফ শেষে আপনি যখন ৫০টা সিরিয়াল, ২০০ মুভি, আপনার ক্লাবের দশটা কাপ জেতার অভিজ্ঞতা নিয়ে বের হবেন, তখনই হয়তো আপনার বন্ধু ফাইভারে ৫০ হাজার ডলার কামিয়ে ফেলবেন। ১০০০০ ঘন্টা কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফেলবেন, কোডিং শিখবে, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখবে, গ্রাফিক ডিজাইন শিখবে আরও কতো কিছু শিখবে।
ভার্সিটি লাইফ শেষে আপনার সিভিতে কো কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের জায়গায় যখন ওয়াচিং মুভি, রিডিং বুকস ছাড়া আর কিছু লেখার পাবেন না। ২০ হাজার টাকার একটা চাকরির জন্য যখন জুতার শুকতলা ক্ষয়ে ফেলবেন, তখনই হয়তো আপনার বন্ধু আপনার মতো দশজনকে রিক্রুট করার সক্ষমতা অর্জন করে ফেলবেন। এভাবে বাড়তে বাড়তে দুজনের মধ্যকার দুরত্ব এতো বেশি হয়ে যাবে ঠিক কোণের বাহুদুটোর মতো। কেউ কারও নাগাল পাবে না, অথচ দুজন শুরু করেছিলেন একই জায়গা থেকে, সমযোগ্যতা থেকে।
টেকনোলজিকালি আজকে আমরা এমন একটা জায়গায় দাড়িয়ে আছি, যেখানে আপনার মেধা ও পরিশ্রমের মূল্য দেবার লোক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে, যেটা দশ বছর আগেই সম্ভব ছিল না। আপনার যেকোনো ছোট স্কিল মনিটাইজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যেটা একসময় ছিল শুধুমাত্র শখ, সেই শখ থেকেই পয়সা উপার্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং সেটা সারাবিশ্ব থেকেই। নীলফামারীর প্রত্যন্ত একটি অঞ্চল থেকে অ্যামেরিকার একজনের সমান ইনকামের সুযোগ করে দিয়েছে টেকনোলজি।
এরকম সুবর্ণ সুযোগ পায়ে ঠেলে সিরিয়াল, মুভি, আইপিএল, সিএল করবেন নাকি নিজের ক্যারিয়ার গড়বেন, চয়েস ইজ ইওরস। অল্প অল্প করে নিজেকে গড়ে তুলুন, একসময় দেখবেন আপনার সমসাময়িকদের সাথে আপনার দুরত্ব হবে কোণের সেই বাহুদুটোর মতো। নিজেকে এমন একটা পজিশনে আবিষ্কার করবেন, যার থেকে বন্ধুরা থাকবে যোজন যোজন দূরে।