আপনি কী হতে চান সেটাই মূলত জীবনের লক্ষ্য। লক্ষ্য দুই ধরনের হয়। স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী। অল্প সময়ের মধ্যে কিছু অর্জন করতে চাওয়া স্বল্প-মেয়াদী লক্ষ্য। যেমন- আগামী কালের পরীক্ষায় ভালো করার জন্য সিলেবাসের পড়া আজকের মধ্যে শেষ করা। অন্যদিকে ভবিষ্যতে কোনো কিছু অর্জন করতে চাওয়ার নাম, দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য। যেমন- বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য ভালোভাবে পড়াশুনা করা।
একটি সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণে আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে আপনার কী করা উচিৎ। তারপর আপনাকে নির্দিষ্ট এবং সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। আপনার লক্ষ্য যদি সুস্পষ্ট না হয় তাহলে প্রচেষ্টাগুলো উদ্দেশ্যহীন হবে।
লক্ষ্য নির্ধারণে তিনটি প্রশ্ন
আপনার লক্ষ্য নির্ধারণে প্রথমেই আপনাকে ভাবতে হবে-
১. আপনি কি করবেন?
২. কেন করবেন?
৩. কখন করবেন?
ধরুন আপনি একটি গবেষণাপত্র জমা দেবেন। ইতিবাচক ফলাফলের জন্য আপনাকে অবশ্যই এ তিনটি প্রশ্ন সামনে নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলো- আগামী ২০ই মার্চের (কখন করবো) মধ্যে আমি গবেষণাপত্র তৈরির জন্য (কেন করবো) সকল তথ্য সংগ্রহ করবো (কি করবো)।
সঠিক লক্ষ্যের বৈশিষ্ট্য
আপনার জীবনের লক্ষ্য হতে হবে-
১. আপনার দক্ষতা ও ক্ষমতার মধ্যে: আগে নিজের ক্ষমতা ও দুর্বলতা সম্পর্কে জানুন যা আপনার উপযুক্ত লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়তা করবে।
২. বাস্তববাদী: দিনে আপনি তিনটি নতুন শব্দের বানান শিখবেন এটা বাস্তববাদী লক্ষ্য। কিন্তু দিনে পঞ্চাশটি নতুন শব্দের বানান শিখতে চেষ্টা করাটা বাস্তবভিত্তিক লক্ষ্য নয়।
৩. নমনীয়: আপনি যেভাবে চেয়েছিলেন ফলাফলটা সেভাবে নাও হতে পারে। তখন আপনার লক্ষ্য পরিবর্তন করা দরকার হতে পারে। সুতরাং সর্বদা নমনীয় হোন। আপনি যখন বুঝতে পারবেন আপনার লক্ষ্য পরিবর্তন করা দরকার তখন আপনি এটা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকুন।
৪. পরিমাণযোগ্য: লক্ষ্য অর্জনে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই অবগত থাকতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনে এটি বেশি প্রয়োজন। কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বুঝতে না পারাটা আভাস দিচ্ছে যে, আপনার কাজগুলো ব্যার্থতার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
৫. আপনার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে: যখন আপনি কোনো টিমওয়ার্ক করবেন, তখন এর সফলতার জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করা উচিৎ নয়। আপনার কাজের নিয়ন্ত্রণ আপনার কাছে থাকলেও অন্যদেরটা আপনার কাছে নয়। আপনি হয়তোবা আপনার কাজ পুরোপুরিভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু অন্যরা ঠিকমতো কাজ না করলে কখনো আপনি লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না।
অনেক সময় আমাদের বাবা-মা, শিক্ষক বা পরামর্শদাতা লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন। এটা সবার গ্রহণ করা উচিৎ। কারণ তারা জানেন কোনটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সফলতার ব্যাপারে প্রচণ্ড আগ্রহী এবং সফলতার জন্য তারা আমাদেরকে সহযোগিতা করতে সক্ষম।