বর্তমান পৃথিবী আমাদের চার দিক থেকে নানা মোহ দিয়ে আবদ্ধ করে রেখেছে। ফলে বলা চলে আগেকার শিক্ষার্থীদের তুলনায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সময় কিছুটা কমে গেছে। আজকের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মনে একটা ‘সংক্ষিপ্তকরণের’ মানসিকতা দেখা যায়। উদাহরণ আকারে বলা যায়, পড়ার ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী যখন কোনো বিষয় না বুঝে, পরবর্তী সে বিষয়টি পড়া বা বোঝার চেষ্টা তারা করে না। বিষয়টি তারা তাদের শিক্ষক, হাউজ টিউটর বা অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করে বুঝে নেয়। ফলে তারা নিজে নিজে চেষ্টা করে বোঝার যে আনন্দ তা হতে বঞ্চিত হয়। অথচ তারা যদি পড়ার আনন্দ পেত, অন্য দিকে আরো বেশি উপকৃত হতো।
নিজে নিজে বোঝার সুবিধা
প্রথমত, শিক্ষার্থীদের হাউজটিউটরের ওপর খুব বেশি নির্ভর করতে হবে না। অভিভাবকরাও হাউজটিউটরের বিষয় নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হবে না। এতে শিক্ষার্থী নিজের চেষ্টায়ই তার পাঠ শিখবে।
দ্বিতীয়ত, শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে পড়ে বোঝার অভ্যাস তৈরি হলে, যেকোনো কঠিন বিষয় বুঝতেও তারা আত্মবিশ্বাসী হবে এবং পারবে।
তৃতীয়ত, কঠিন বিষয় যখন তারা বুঝবে, এখন শিক্ষার্থীরা যেকোনো বড় বই পড়তে তারা আগ্রহী হবে এভাবে তাদের মধ্যে ভালো পড়ার অভ্যাস তৈরি হবে।
চতুর্থত, শিক্ষার্থীদের পড়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস তৈরি হলে বাস্তব জীবনে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নিতে তারা তৈরি হবে।
নিজে নিজে বুঝবেন কিভাবে
প্রথম ধাপ: নিজে নিজে কোনো পড়া বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। এ ক্ষেত্রে জুনিয়ার অন্য সব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে পড়তে হবে। যেমন মোবাইল বন্ধ, টেলিভিশন বন্ধ, আড্ডা বাজি না, কিংবা অন্য কারো কথাও শোনা যাবে না।
দ্বিতীয় ধাপ : আপনাকে একই বিষয় বারবার পড়তে হবে। কারণ বারবার পড়া আপনার ধারণাকে পরিষ্কার করবে এভাবে আপনি পড়াতেও মজা পাবেন।
তৃতীয় ধাপ : যতটা সম্ভব একটা খাতা ব্যবহার করুন। কারণ কোনো বিষয় বুঝতে হলে আপনাকে হয়তো কোনো নোট নিতে হবে, কোনো ছবি আঁকতে হবে অথবা আপনি যেভাবে বোঝেন সেভাবে কোনো লেখা লিখবেন।
চতুর্থ ধাপ : কোনো কঠিন বিষয়কে আগ থেকে কঠিন না ভেবে বরং সহজ ভেবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে পড়তে থাকুন, এভাবে সেটি কঠিন হলেও আপনার বুঝে আসবেই।
পঞ্চম ধাপ : আপনি পড়ে যে বিষয়টা বুঝেছেন তা অন্যের সাথে শেয়ার করুন বা অন্যকে বোঝান। এতে বিষয়টা আপনার মাঝে স্থায়ী হবে।
আশা করা যায়, এসব বিষয় লক্ষ রেখে পড়লে আপনি নিজেই হয়ে যাবেন নিজের শিক্ষক। অর্থাৎ নিজে নিজে সব বুঝতে পারবেন। তবে এমন অনেক বিষয় আছে সেগুলোর ক্ষেত্রে শিক্ষকের সাহায্য নিতেই হয়। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকের কাছ থেকে বোঝা দোষের কিছু, আপনাকে যেটা করতে হবে সেটি বুঝে আবার নিজে নিজে চেষ্টা করে বুঝতে হবে। এতে আপনার বোঝার আত্মবিশ্বাস কমবে না।
এস এম মাহফুজ