পেশাদারি আচরণ শিষ্টাচারের একটি রূপ যা মূলত শ্রদ্ধাশীল ও নম্র আচরণের সাথে যুক্ত। বিশ্বাস করুন বা না করুন, পেশাদারি আচরণ আপনার ক্যারিয়ারের উন্নতিতে ব্যাপক উপকার এবং ভবিষ্যতে সাফল্যের সম্ভাবনাগুলিকে উন্নত করতে পারে। এই নিবন্ধে আমরা তুলে ধরবো দৈনন্দিন জীবনে কিছু সাধারণ পেশাদারি আচরণ সম্পর্কে। যা আপনার ব্যক্তিত্বকে নিয়ে যেতে পারে অনন্য উচ্চতায়।
দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ ২৫টি পেশাদারি আচরণ
১। মানুষকে সবার সামনে প্রশংসা করুন। আর কারো কাজের সমলোচনা করতে হলে তাকে সবার সামনে থেকে আলাদা করে ভুলগুলো ধরিয়ে দিন।
২। রাস্তায় অন্যের সাথে কথা বলার সময় সানগ্লাস খুলে কথা বলুন। এটি অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার একটি চিহ্ন। কারণ আপনার চোখের চাওয়া আপনার কথা বলার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
৩। কেউ কথা বলার সময় কখনোই বাধা দিবেন না। অন্যের মতামত শেষ হবার পর নিজের মতামত উপস্থাপন করুন।
৪। যদি আপনি অনলাইনে কাজ করেন এবং নিজের ফোনকে কাজে বাধা মনে করেন তবে এটাকে সম্পূর্ণ অফ করে অন্য রুমে রেখে দিন।
৫। যদি কোনো বন্ধু বা সহকর্মীর সঙ্গে রাইড শেয়ার করেন বা হোটেলে খাবার খান, সেক্ষেত্রে আপনার বন্ধু বা সহকর্মী আজকে বিল পরিশোধ করলে কালকে আপনি পরিশোধ করুন।
৬। কেউ আপনার কাছে পরামর্শ না চাওয়ার আগে পরামর্শ দেবেন না তাতে আপনি শুধু অবহেলা পাবেন।
৭। কারো কাছ থেকে টাকা ঋণ করলে সেটা অবশ্যই ফেরত দিন। যদি ঋণদাতার মনে না-ও থাকে তারপরও তাকে সময়মতো ফেরত দিন।
৮। যখন কেউ আপনাকে তার মোবাইলে ছবি দেখায়, তখন গ্যালারির ডান বা বামে যাবেন না। কারণ আপনি জানেন না পরের ছবিতে কী আছে।
৯। কাউকে একসঙ্গে দুইবারের বেশি ফোন কল করবেন না। যেহেতু আপনার কল রিসিভ করছে না, তার মানে ব্যক্তিটি আপনার কলের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজে ব্যস্ত।
১০। ও এখনো বিয়ে করোনি কিংবা তুমি নতুন বাড়ি কিনছো না কেন? কাউকে এই ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন না।
১১। প্রথম পরিচয়েই হাসিমুখে কথা বলুন।
১২। কারো সঙ্গে আপনি মজা করছেন কিন্তু তিনি যদি সেটা উপভোগ না করেন, তাহলে আপনার অবশ্যই থামা উচিত।
১৩। কারো সঙ্গে কথা বলার সময় ফোন টেপাটিপি করবেন না।
১৪। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো বিষয় আপনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজের চরকায় তেল দিতে থাকুন।
১৫। সবাইকে সম্মান দিতে শিখুন। হোক তিনি রিক্সাওয়ালা কিংবা আপনার অফিসের বস। কাউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করে শ্রদ্ধার সাথে বিনম্রভাবে কথা বলুন।
১৬। কারো বেতন – চাকরি -ব্যবসা এসব নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করবেন না।
১৭। নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করুন। জীবন খুবই ছোট, নেতিবাচক চিন্তার ফলে ছোট্ট এই জীবনের আনন্দগুলো ফিকে হয়ে যায়।
১৮। কেউ আপনার সাথে উদ্ধত আচরণ করলে আপনি নম্র আচরণ করুন। কারণ কোনো মানুষই স্বাভাবিক অবস্থাতে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে না।
১৯। কেউ আপনার সাথে নিচু স্বরে কথা বললে আপনিও তার সাথে নিচু স্বরে কথা বলুন। হয়তো সে চাচ্ছে না কথাগুলো অন্য কেউ জানুক।
২০। কেনাকাটার পর ভাঙতি বা টাকা খুচরা করার সময় অন্যের মানিব্যাগ বা ড্রয়ারের দিকে তাকানোর অভ্যাস থাকলে পরিহার করুন।
২১। ম্যাসেঞ্জার বা অন্যকোথাও কাউকে বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে হাই, হ্যালো ইত্যাদি পরিহার করে সরাসরি আপনার প্রয়োজনীয় কথা বলুন। প্রয়োজনে হাই, হ্যালোর সাথে মূল কথাটি বলে ফেলুন।
২২। ব্যাক্তিত্বশীল কোনো মানুষের সাথে (বয়জ্যেষ্ঠ বা কনিষ্ঠ) কথা বলার সময় অতিরিক্ত ভদ্রতা দেখানো পরিহার করুন। স্বাভাবিকভাবে তার সাথে কথা চালিয়ে যান। এতে আপনার ব্যক্তিত্ব তার সামনে ফুঁটে উঠবে।
২৩। মতের মিল না হলেও অন্যের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব থেকে বিরত থাকুন।
২৪। মানুষকে বিশ্বাস করুন কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়।
২৫। চাকরিক্ষেত্রে কলিগদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। কিন্তু তারমানে এই না তারা আপনার একান্ত আপন। সুযোগ বুঝে আপনার ঘাড়ে পাড়া দিয়ে উপরে উঠতে দ্বিধা করবে না।
অনেকেই মহিলা কলিগদের বা পুরুষ কলিগদের প্রাধান্য দিতে গিয়ে একগাদা জল খেয়ে ফেলেন। সর্ব অবস্থায় প্রিয় পরিবারকে মাথায় রাখুন।
লেখাটির ইংরেজি ভার্সন দেখতে ক্লিক করুন: 25 Tips on professional behaviors in daily life
প্রিয় পাঠক, আপনার কোনো পরামর্শ থাকলে, তা জানান মন্তব্যে…