সরকারি চাকরির বয়স শেষ? ভাবছেন এই সার্টিফিকেট দিয়ে এখন কী করবেন? সরকারি চাকরি ছাড়াও আপনার অর্জিত সার্টিফিকেট অনেক মূল্যবান। আমাদের দেশের পরিপেক্ষিতে সরকারি চাকরিকে আমি সবচেয়ে এগিয়ে রাখব অবশ্যই। তবে এটাও সত্য যে সরকারের পক্ষে এতোবড় জনগোষ্ঠীর চাকরি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই কষ্ট করে যখন সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন, সেটার বেস্ট ইউজ নিশ্চিত করা উচিৎ।
বেসরকারি চাকরির প্রস্তুতি
সরকারি চাকরি ছাড়া আর কীভাবে ক্যারিয়ার গড়ে তুলবেন, সেবিষয়ে অল্প কিছু কথা-
যদি দেশে থেকে যাবার ইচ্ছা থাকে তাহলে দেশের সেক্টর-ভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অনেকেই গুছিয়ে প্রস্তুতি নেন না। বেসরকারি চাকরির প্রস্তুতির জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিৎ।
ক. প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন
প্রথমেই উচিত নিজের সেক্টর কিংবা ইন্টারেস্টের উপর ভিত্তি করে পটেনশিয়াল প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা। আমরা অনেকেই এই কাজ করি না। এলোপাথাড়িভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অ্যাপ্লাই করতে থাকি। কিন্তু সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে একটি বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। আপনার এক্সপার্টাইজ সাব্জেক্ট থেকে আপনার ক্যারিয়ার অন্য ফিল্ডে চলে যেতে পারে। কিংবা এমন এক্সপেরিয়েন্স আপনার সিভিতে যোগ হবে যেটা পরবর্তীকালে কোনো কাজে আসবে না।
তাই প্রথমে নিজের চয়েজ অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লিস্ট ডাউন করুন। সনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও সেখানে থাকতে পারে।
খ. শেখার চেষ্টা করুন
আপনার লিস্টে এমন প্রতিষ্ঠান রাখুন যেখানে চাকুরির সুযোগ পেলে আপনি একটি পূর্নাঙ্গ কাজ শিখে নিতে পারবেন। মনে রাখবেন- ক্যারিয়ারের প্রথম কয়েক বছর শুধু শেখার চেষ্টা করবেন। যত শিখবেন ভবিষ্যতে সেটা বহুগুনে ফিরে আসবে।
একটা ছোট টিপস দিই- বড় প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র একটি অংশ না হয়ে মাঝারি অথবা ছোট কিন্তু সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানের একটা বড় অংশ হওয়া ভালো। এতে আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে বেশি শিখতে পারবেন।
গ. জব ভ্যাকেন্সি খুঁজুন
আপনার লিস্টে থাকা সকল প্রতিষ্ঠানের জব ভেকেন্সি নিয়ম করে চেক করুন। খুবই ভালো হয় যদি ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়ে যান। অধিকাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপে ভালো পারফর্মেন্স করা ব্যক্তিকে রিক্রুটিং এর সময় বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়।
ঘ. প্রতিটি সার্কুলারের জন্য আলাদা সিভি
এপ্রোপ্রিয়েট কোনো সার্কুলার পেয়ে গেলে কালক্ষেপণ করবেন না। প্লান করুন। গতানুগতিক তৈরি করা একই সিভি সব সার্কুলারে পাঠিয়ে দিবেন না। সবাই এই ভুলটাই করে। আর এজন্যই ইন্টার্ভিউয়ে ডাক পায় না। প্রতিটি সার্কুলারের জন্য আলাদা আলাদা সিভি প্রস্তুত করুন। চিন্তা আসতে পারে- আপনার যেহেতু অভিজ্ঞতা নেই, তাহলে সিভিতে ভিন্নতা আনবেন কীভাবে? সিভি প্রপারেশন বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত লিখব ইন-শাহ-আল্লাহ।
ঙ. সিভি প্রস্তুত হয়ে গেলে যথাযথ কমিউনিকেশন করে সিভি সেন্ড করুন। ই-মেইল এর বডি প্রফেশনাল হওয়া উচিত।
ইন্টার্ভিউয়ের জন্য সিলেক্টেড হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। এ লেখা যেহেতু বড় হয়ে গেছে, তাই ইন্টার্ভিউ প্রস্তুতি নিয়ে পরের লেখায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করবো। একই সাথে কিছু ভুল বা ত্রুটি নিয়েও কথা বলবো ইন-শাহ-আল্লাহ।
লেখক : আহমেদ সেজান
Department of Statistics & Data Science
Jahangirnagar University