ক্যারিয়ার নিয়ে অনেকের অসন্তুষ্টি থাকে। এই অসন্তুষ্টির কারণে কখনো কখনো কর্মক্ষেত্রে ভালো কাজ উপহার দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। আবার অনেকেই আছেন যাঁরা অপছন্দের কাজটি পেয়েও কর্মক্ষেত্রে সফল দৃষ্টান্তের উদাহরণ তৈরি করেছেন। ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে আপনি কাজটি কীভাবে করছেন তার ওপর। অপছন্দের চাকরি পেয়েও নিজেদের ক্যারিয়ারে কীভাবে সফল হয়ে ওঠা যায়, আসুন এবার সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিরাই দিয়েছেন এসব পরামর্শ—
১. কেপি ক্যারিয়ারের প্রতিষ্ঠাতা মিরিয়াম সালপেটার বলেন, সর্বোত্তম কর্মজীবন বা চাকরি হলো এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি যে দক্ষতাগুলো অর্জন করেছেন, সেগুলোর পরিপূর্ণ ব্যবহার করতে পারছেন।
তবে প্রতিটি কাজের জন্য আপনার সব দক্ষতা দেখানোর প্রয়োজন নেই। প্রতিটি কাজকে নতুন কিছু শেখার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে এবং উদার মনমানসিকতা ধরে রাখতে হবে। হয়তো দেখা যাবে, আপনি সত্যিই এমন কিছু উপভোগ করছেন, যা কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি।
২. ক্যারিয়ার-বিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য মুজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথরিন মিনশিউয়ের মতে, জীবনে চলতে গেলে সবকিছু নিজের পছন্দমতো হবে—এমন কোনো কথা নেই। তাই ক্যারিয়ারকে খুব বেশি সিরিয়াসলি নেওয়া যাবে না।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, প্রচুর মেধাবী লোক তাঁদের কর্মজীবন সবচেয়ে অপছন্দের কাজ দিয়ে শুরু করেছিলেন। শুরুর সেসব কাজ তাদের জন্য একেবারেই উপযুক্ত ছিল না।
ক্যাথরিন মনে করেন, পেশাগত বিকাশের বিষয়টি সরলরৈখিক নয়। এটি সব সময় সহজ পথে চলে না। তবে একজন নিজের জীবনে কী করতে চান, তা যদি খুঁজে বের করা যায় এবং তা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে কেউ, তবে লক্ষ্যপূরণ খুবই সম্ভব।
৩. ক্যারিয়ার কোচ ক্রিস্টিনা লিওনার্দি বলেন, ‘আপনার ক্যারিয়ার জীবনে পরিচয় হওয়া প্রতিটি ব্যক্তির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। আপনার সঙ্গে পরিচয় হওয়া প্রতিটি মানুষ হতে পারে একটি সম্ভাব্য নতুন সুযোগ। তাঁরা ভবিষ্যতে আপনার ব্যক্তিগত বা পেশাগত—যেকোনো প্রয়োজনে আসতে পারে। তাই সবার সঙ্গে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করুন। কারণ, আপনি কখনোই জানেন না যে, কে কখন কীভাবে আপনার জীবনে কাজে আসবে।’
৪. সার্চ ইঞ্জিন ইয়াহুর সাবেক সিইও মারিসা মায়ার এ প্রসঙ্গে এক বন্ধুর বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু আন্দ্রে বলেছিল, সঠিক বিকল্প বাছাই করার জন্য নিজের ওপর বেশি চাপ দেওয়া ঠিক নয়। কাজের প্রতি সৎ হতে হবে। সামনের অনেকগুলো ভালো বিকল্প থেকে একটিকে পছন্দ করে নিতে হবে। সেখানে নিজের মনোযোগটা ঠিকমতো দিতে হবে। তাহলে চাকরি ক্ষেত্রেই সাফল্য ধরা দেবে।’
৫. লেখক লিসা হ্যাবারস্যাক মনে করেন, কাজ নিয়ে বিষণ্নতা থাকলে ঝেড়ে ফেলতে হবে। নিজের কাজগুলো বুঝে নিয়ে সেসব গুছিয়ে নিতে হবে প্রথমে। এরপর কাজে লেগে পড়তে হবে।
কাজের সময় ফেসবুক এড়ানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন পেশাদারের মতো আচরণ করলে দেখা যাবে কাজটি নিজের কাছে অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে উঠবে। এটি আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দেয়। আর তখনই সহকর্মীরাও একজনকে সক্ষম কর্মী হিসেবে দেখবে। আর কাজ ভালো হলে সবাই তাতে হাততালি দেবেই।
৬. মার্কিন মডেল ও অভিনেত্রী জেন ফন্ডা অবশ্য অপছন্দের চাকরি করার ক্ষেত্রে বেশ সোজাসাপটা পরামর্শ দিয়েছেন। সবার তা পছন্দ না-হতে পারে।
জেন বলেন, ‘আপনার বেছে নেওয়া ক্যারিয়ার যদি আপনার অপ্রত্যাশিত হয়, আপনার কাজে অসুবিধার সৃষ্টি করে—তাহলে নিজেকে সান্ত্বনা দিন। নিজেকে এটাই বোঝান যে এটি ছাড়া আর কোনো ক্যারিয়ার নেই।’
তথ্যসূত্র: দ্য মুজে ও ফোর্বস
আরো পড়ুন—
যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার চাকরি ছাড়ার সময় হয়ে গেছে
চাকরির জন্য জুতা ক্ষয় নাকি দশজনকে রিক্রুট করবেন, চয়েস ইজ ইওরস