যদি কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করে আপনার ‘ধ্রুবতারা’ কী, আপনি কী বলবেন?
আমি আকাশের তারাটির কথা বলছি না (যদিও সেটি দেখতে চমৎকার)। আমি বলছি সেই নির্দেশনার আলোর কথা- যা আপনাকে জীবনের বাঁকগুলোতে চলতে সাহায্য করে।
যখন আমি জিটিএফসি শুরু করি, তখন আমি নানা রকম আইডিয়া এবং সম্ভাবনার সমুদ্রে সাঁতার কাটছিলাম। এটা উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত ছিল, কিন্তু একই সাথে একটু ভীতিকরও। তখনই আমি বুঝতে পারলাম যে, আমার নিজের ধ্রুবতারা বা নর্থস্টারের প্রয়োজন – একটি সুস্পষ্ট, আকর্ষণীয় “কেন” দরকার। যা আমার সিদ্ধান্তগুলোকে নির্দেশনা দেবে।
এটা কোনো কাব্যিক বিবৃতি তৈরির বিষয় ছিল না। এটি ছিল নিজেকে সত্যি সত্যি জিজ্ঞেস করা যে, আমার জন্য আসলে কী গুরুত্বপূর্ণ এবং আমি কী প্রভাব ফেলতে চাই। যখন আমি সেই স্পষ্টতা পেলাম, তখন জিটিএফসিকে নিয়ে পথ চলা- শুধু অন্ধবিশ্বাসে লাফের চেয়ে আরও অনেক বেশি মনে হলো। মনে হলো- এটি একটি উদ্দেশ্যপূর্ণ পদক্ষেপ। ফলে অনেকগুলো প্রজেক্ট ব্যর্থ হওয়ার পরও এর সাথে লেগে থাকতে আমাকে বেগ পেতে হয়নি।
আসুন জানি- এই ধ্রুবতারা থাকাটা কেন এত শক্তিশালী?
- এটি আপনাকে বিভিন্ন ঝামেলার মধ্যে আসলেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিতে সাহায্য করে।
- এটি সিদ্ধান্ত নেওয়াকে অনেক সহজ করে তোলে (আমি কি এটা করব? এটি কি আমার ধ্রুবতারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?).
- এটি যখন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যায় তখন আপনাকে অনুপ্রাণিত রাখে।
- এটি আপনার প্রতিদিনের কাজকর্মে একটি উদ্দেশ্য বা পারপাস যুক্ত করে।
আপনার নিজের ধ্রুবতারা খুঁজে পেতে আগ্রহী? এখানে শুরু করার একটি দ্রুত উপায় বলছি-
- ভাবুন কী আপনাকে উত্তেজিত করে। আপনি কোন বিষয়ে উদ্দীপিত?
- আপনার আদর্শ প্রভাব কল্পনা করুন। আপনি কীভাবে দুনিয়ায় আপনার ছাপ রাখতে চান?
- আপনার ভেতরকার সুপারপাওয়ার বা অনন্য শক্তিগুলো বিবেচনা করুন।
- এগুলো সব একত্রিত করুন একটি সহজ বিবৃতি বা বাক্যে তা লিখে ফেলুন- যা আপনাকে প্রতিফলিত করে।
মনে রাখবেন, আপনার ধ্রুবতারা পাথরে খোদাই করা দরকার নেই। আপনার উন্নতি ও পরিবর্তনের সাথে এটিও পরিবর্তিত হতে পারে। এটি যাত্রার অংশ!
কিছু অনুপ্রেরণা দরকার? কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি-
- অপরা উইনফ্রে: “শিক্ষক হওয়া। এবং আমার শিক্ষার্থীদেরকে তাদের ধারণার চেয়েও বড় হতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য পরিচিত হওয়া।”
- রিচার্ড ব্রানসন: “জীবনের ভ্রমণে মজা করা এবং আমার ভুল থেকে শেখা।”
- একজন শিক্ষক: “প্রতিটি শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা দক্ষতা জাগ্রত করা।”
- একজন ছোট ব্যবসার মালিক: “সুন্দর, টেকসই পণ্য তৈরি করা- যা মানুষের ঘরে আনন্দ নিয়ে আসে এবং স্থানীয় কারিগরদের উপকার করে।”
আপনার মিশন স্টেটমেন্টটি সুবিশাল হওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি শুধুমাত্র আপনার মনের প্রকৃত চাওয়া হওয়া দরকার।
এখানে আপনার জন্য একটি ছোট চ্যালেঞ্জ: এই সপ্তাহে আপনার ধ্রুবতারাটি নির্ধারণ করার চেষ্টা করুন। তারপর, সেটিকে আপনার সিদ্ধান্তের জন্য একটি লেন্স হিসাবে ব্যবহার করুন। পরবর্তী কয়েক দিনের মধ্যে লক্ষ্য করুন- আপনি কীভাবে সবকিছুকে গ্রহণ করছেন। কীভাবে বদলে যাচ্ছে আপনার পৃথিবী।
যদি আপনি এ বিষয়ে সহায়তা চান, আমাদেরকে জানাতে পারেন। ক্যারিয়ার ইনটেলিজেন্সের কনসালটেন্সি সেবা আপনার জন্য প্রস্তুত থাকবে। নিয়মিত আপডেট থাকতে টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন করুন- t.me/careerintelligencebd
মনে রাখবেন, আপনার ধ্রুবতারা বা নর্থস্টার হলো আপনার জীবন পরিচালনার ব্যক্তিগত জিপিএস।
এটা আপনার যাত্রাপথ নির্দেশ করছে কি?