মো. বাকীবিল্লাহ : ডোমেইন হোস্টিং ওয়েবসাইট। এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য যা অবশ্যই জানা দরকার। সহজে বুঝুন। একটি ওয়েবসাইট বানাতে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়।
১. ডোমেইন
২. হোস্টিং
৩. ডিজাইন
৪. ডেভেলপমেন্ট
ডোমেইন
যেমন – www.facebook.com এটা একটা ডোমেইন। ডোমেইন কেনার পর প্রতিবছর রিনিউ করতে হয়। মূলত একটি ওয়েবসাইটের ভিত্তি হচ্ছে ডোমেইন। এটি আপনার নিয়ন্ত্রণে তো সাইট আপনার নিয়ন্ত্রণে।
হোস্টিং
আমরা যখন কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করি তা দেখতে যত সুন্দরই হোক না কেন, এগুলো আসলে কতগুলো কিছু হিজিবিজি কোডের সমষ্টি। এই কোডগুলো ফাইলে লিখে সেগুলো বিভিন্ন ফোল্ডারে রাখা হয়, যেভাবে আমরা কম্পিউটারের ড্রাইভে বা মোবাইলের মেমোরি কার্ডে বিভিন্ন জিনিস রাখি। ওয়েবসাইটের ফাইল ও ফোল্ডারগুলো যেখানে রাখা হয় তাকে বলা হয় হোস্টিং। এটাও কেনার পর প্রতিবছর আপনাকে রিনিউ করতে হবে।
ডোমেইন ও হোস্টিং-কে আমরা ঘর বানানোর ইট-বালু ও রডের সাথে তুলনা করতে পারি। তাহলে ডোমেইন হোস্টিং কেনা মানে আপনার ইটবালু, সিমেন্ট ও রড কেনা শেষ। এবার ঘর বানানোর পালা। সেক্ষেত্রে তো অবশ্যই আপনার বা ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি নকশা লাগবে।
ওয়েব ডিজাইন
এই নকশাই হলো ওয়েবসাইট ডিজাইন। এটা আপনি নিজেও করে দিতে পারেন অথবা দক্ষ কাউকে দিয়ে করিয়ে নিতে পারেন। এটায় একবারই খরচ হবে।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
এটা হলো ঘর বানানোর কাজ। যেটা দক্ষ মিস্ত্রি ছাড়া বানানো সম্ভব না। আপনার বিল্ডিং আপনি গাঁথতে পারেন। কেউ বাধা দেবে না। কিন্তু সেই ঘরের নিচে আপনি ঘুমাতে সাহস পাবেন কিনা আপনার বিষয়। এক্ষেত্রেও একবারই আপনাকে খরচ করতে হবে।
এখন আমাদের কাছে যখন কেউ ওয়েবসাইট বানাতে চান, তখন আমরা সব মিলিয়ে একটা বাজেট দিই। এক্ষেত্রে ডোমেইনভেদে সাধারণত ১০ থেকে ৫০ ডলার বা তারও বেশি খরচ থাকে। হোস্টিংও সুযোগ-সুবিধার উপর ভিত্তি করে ৫ ডলার থেকে হাজার ডলার পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে সাধারণ ওয়েবসাইট চালানোর জন্য বছরে ৫০/৬০ ডলার ( ৪/৫ হাজার টাকা) হলেই চলে।
এবার থাকলো ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট। এক্ষেত্রে ফিচার বা সুযোগ-সুবিধার ওপর ভিত্তি করে ১০০ ডলার থেকে শুরু করে ৫/৬ হাজার ডলার বা আরো বেশি টাকা লাগতে পারে। কিন্তু কাছের মানুষদের কাছ থেকে ডিজাইন ও ডেভেলমেন্ট খরচটা সামান্য নিই। অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিই না। সেকারণেই অল্প খরচে ওয়েবসাইট তৈরি করে দিতে পারি।
কিন্তু এ জায়গাটাতেই সমস্যা। দুয়েকজন কাছের মানুষ প্রথমে দুই/তিন হাজার টাকা দিয়ে বেশ গরজ দেখিয়ে বলেন- ‘কাজ শুরু করেন, বাকি টাকা ওয়েবসাইট বুঝে নেয়ার সময় দেবো’।
সেই টাকা দিয়ে বা আরো নিজে কিছু মিলিয়ে ডোমেইন হোস্টিং কিনলাম। তারপর ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের কাজও প্রায় শেষ করে আনলাম। এই পর্যায়ে তাদের আর গরজ থাকে না। ফলে ওয়েবসাইটটার পেছনে ৫/৭ দিনের পরিশ্রম মাটি হয়ে যায়। কাছের মানুষ হওয়ায় সংকোচবশত কিছু বলা বা তাড়াও দিতে পারি না। ভাবি হয়তো টাকা পয়সা ম্যানেজ করে উনিই যোগাযোগ করবেন।
কিন্ত না। ওভাবেই পড়ে থাকে। এক বছর পর ডোমেইন হোস্টিংয়ের মেয়াদ শেষ। সাইট অচল। এরপর ধীরে ধীরে তিনি ভাবতে থাকেন- লোকটা আমার টাকাটা মেরে দিলো। আর আমি ভাবি- ভাইটা আমার সময় তো লস করলোই, কিছু টাকাও খরচ করালো!
লেখাটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ডোমেইন হোস্টিং ওয়েবসাইট সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। হ্যাপি ওয়েব ডেভেলপিং!