মো: বাকীবিল্লাহ
আপনি চাকরিতে নতুন যোগ দিয়েছেন। আপনাকে স্বাগতম। প্রতিষ্ঠানের কাছে আপনাকে উপস্থাপন করার এখনই সময়। কিন্তু অনেকেই এই সময়টায় কিছু ভুল করেন। ফলে ক্যারিয়ারে পান না কাঙ্খিত সফলতা। আসুন জেনে নিই কিছু ভুলের কথা, যা অধিকাংশ তরুণ কর্মীই করে থাকেন।
১. কথা বলতে ভয়
ধরুন একটি অনুষ্ঠানে আপনাকে কিছু বলতে বলা হলো। আপনি সংকোচে জড়োসড়ো হয়ে গেলেন। আপনি বার বার কথা বলতে আপনার অনিচ্ছার কথা জানাচ্ছেন। এমনটা কখনোই করবেন না। এই সুযোগটা কাজে লাগান। আত্মবিশ্বাসের সাথে কিছু বলুন। এতে সহকর্মীদের মাঝে আপনার অবস্থান শক্তিশালী হবে।
এছাড়া কোনো বিষয়ে আপনার মতামত চাওয়া হলে নিঃসংকোচে তা ব্যক্ত করুন। আপনার আত্মবিশ্বাসী মনোভাব আপনাকে সবার মাঝে অনন্য করে তুলবে।
২. আলসেমি বা বোকামির প্রকাশ
অফিসে আপনি কী করেন, তা অন্যরা খেয়াল করেন। আপনার বসও তা দেখতে পারেন। সুতরাং নিজের ডেস্কে হাত, পা তুলে বিশ্রাম নেয়া বা চেয়ারে হেলান দিয়ে একটু ঘুমিয়ে নেয়ার মতো বোকামি করবেন না। আবার ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে বেশি বেশি সময় কাটানোও ঠিক নয়। এসব অপেশাদার আচরণ করতে থাকলে তা নিজের ক্যারিয়ারের বারোটা বাজাবে তা বলতে নিশ্চয়ই বিশেষজ্ঞ হতে হবে না।
৩. যথাযথ পোশাক না পরা
অনেক নতুন চাকরিজীবী ফরমাল পোশাকের ব্যাপারে তেমন সচেতন নন। যেটা তার ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। মনে রাখবেন, পোশাক একজন মানুষের ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে। আবার আপনি যদি উত্তেজক পোশাক পরে অফিসে যান সেটা সহকর্মীদেরকে ভুল বার্তা দিতে পারে।
৪. ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক তৈরি না করা
একজন ডেডিকেটেড কর্মী হিসেবে কঠোর পরিশ্রম অবশ্যই আপনার পেশাগত সাফলের জন্য আবশ্যক। তবে পেশাগত সম্পর্ক আপনার পদোন্নতি কিংবা নতুন কাজ পাওয়ার জন্য খুবই জরুরি। এটা কর্মজগতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেক নতুন চাকরিজীবী এক্ষেত্রে অনাগ্রহী থাকেন। এক্ষেত্রে আপনার বিষয়টি দেখাশোনা করেন এমন উর্ধ্বতন কর্তাদের কাছে ক্যারিয়ার সম্পর্কে পরামর্শ চাইতে পারেন। আর এর মাধ্যমেই তার সার্থে সম্পর্কটি শুরু হতে পারে।
৫. অফিসে গল্প করা
সহকর্মীদের সাথে গল্প করা বা আড্ডায় অংশ নেয়া হতে পারে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি উপায়। তবে এমনটা কখনো অফিসে করা উচিত হবে না। কারণ এর মাধ্যমে সহকর্মীদের সাথে আবার বিরোধও সৃষ্টি হতে পারে। কেউ গল্প বা কারো বিষয়ে কিছু বলতে আসলে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করুন। আর কারো সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে আড্ডা দিতে চাইলে অফিসের বাইরে কোথাও বসুন।
৬. অফিসে দেরি করে আসা
আপনি অফিসে কঠোর পরিশ্রম করেন। বাসায় গিয়ে অতিরিক্ত কাজও করে দেন। কিন্তু আপনি যদি প্রায়ই অফিসে দেরি করে আসেন তাহলে আপনি অলস হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন। সবাই সাধারণত দেখে কে অফিসে আগে আসল, আর দেরিতে গেল। তাই অফিসে যত ভালো কাজই করেন না কেন তা চাপা পড়ে যাবে আপনার দেরি করে আসায়। প্রতিষ্ঠানে আপনার খ্যাতি হবে বিনষ্ট। আর প্রতিষ্ঠানে আপনার অগ্রগতির জন্য পেশাগত সুখ্যাতি খুবই প্রয়োজন।
৭. অতি মাত্রায় আত্মবিশ্বাসী
অতি মাত্রায় আত্মবিশ্বাসী হওয়া তরুণ চাকরিজীবীদের একটা সাধারণ সমস্যা। এটা অনেক সময় আপনার সিনিয়রদের হজম করতে সমস্যা হতে পারে। আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি এখন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্নিল গণ্ডি পেরিয়ে এসেছেন। এখন আপনাকে হতে হবে নমনীয় ও বিনয়ী। কোম্পানিতে আপনার অবস্থানের কথা মনে রাখতে হবে। আপনি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট হতে পারেন। তাই বলে অফিসের সব কাজই আপনি জানেন বা পারেন এমন মনোভাব থাকা উচিত নয়। কারণ এটা আপনার পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হতে পারে।