আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া না হলেও চলতি বছরের মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতিতেই নেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে আয়োজিত সভায় অধ্যক্ষরা চলতি পরীক্ষা পদ্ধতিকেই উত্তম বলে অভিমত দিয়েছেন। এ ছাড়া মেডিক্যাল ভর্তিসংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন এমন বিশিষ্ট চিকিৎসক নেতারাও বিরাজমান পরীক্ষা পদ্ধতিতেই সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করে পরীক্ষা পদ্ধতিতেই ভর্তি হচ্ছে এ মর্মে ঘোষণা দেবে।
মেডিক্যালে ভর্তির বিষয়টি নিয়ে ৫ এপ্রিল শুক্রবার বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজন করে ‘মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি : পরীক্ষা ও জিপিএ’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠক। এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্যসচিবও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। এরা সবাই ভর্তি প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা নেয়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে সুপারিশ করেছেন।
ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, সরকারের শেষ সময়ে এসে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল ভর্তি প্রক্রিয়ার মতো বিষয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন করা উচিত নয়। আর নতুন কিছু প্রবর্তন করতে হলে দীর্ঘ সময় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের জানানো উচিত। তিনি বলেন, গত বছর বিষয়টি যখন উত্থাপন করা হয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল তখন থেকেই ব্যবস্থা শুরু করা। যেহেতু এত দিন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তাই এখন সরকারের শেষ বছরে এসে আর কোনো পরিবর্তন কাম্য নয়। উপদেষ্টা বলেন, এটা যদি কোচিং সেন্টার ঠেকানোর উদ্দেশ্যে করা হয় তাহলে বলব এদের অন্যভাবে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
বিএসএমএমইউর মিল্টন হলে আয়োজিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তৌফিক মারুফ। স্বাগত বক্তৃতা করেন, ফোরামের সম্পাদক বদরুদ্দোজা সুমন। আলোচনা সূচনা করেন বিএমএ’র সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আইয়ুবুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা: ইসমাইল খান, স্বাস্থ্য আন্দোলনের উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক, ফরিদা আখতার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ডা: আব্দুল হান্নান, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা: মাকসুদুল আলম, মতিঝিল আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহানারা বেগম প্রমুখ। বিএমএ’র কোষাধ্যক্ষ ডা: এনসানুল কবির জগলুল, স্নাতকোত্তর চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ডা: রকিবুল ইসলাম লিটু, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা: জামাল উদ্দিন চৌধুরী। সাংবাদিকদের মধ্যে মতামত দেন শিশির মোড়ল, মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, নুরুল ইসলাম হাসিব।
স্বাস্থ্যসচিব ও অতিরিক্ত সচিব ভর্তি বিষয়ে কোনো মতামত না দিলেও বলেছেন, এই বৈঠকের মতামত সুপারিশ আকারে পাঠালে যথাযথভাবে গুরুত্ব দেয়া হবে। অধ্যাপক রশীদ-ই মাহবুব বলেন, ভর্তির বর্তমান পদ্ধতিই অব্যাহত রাখা উচিত। তবে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বর্তমান পদ্ধতির চেয়ে আরো সীমিত করা যেতে পারে। অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তও বর্তমান পদ্ধতি বহাল রাখার সুপারিশ করে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার পরদিনই মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নেয়া উচিত। সূত্র: নয়া দিগন্ত