বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাড়তি কোনো দক্ষতা ছাড়া ভালো অবস্থানে যাওয়া বেশ কঠিন। শুধু অ্যাকাডেমিক দিকে পারঙ্গম হলেই চলবে না, আপনার থাকতে সময়ের সাথে তাল-মিলিয়ে চলার যোগ্যতা। এ ক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি অর্জন করা দরকার বাড়তি কিছু দক্ষতা। এমনই বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত আলোকপাত করা হচ্ছে বাড়তি দক্ষতা বিভাগে। এই নিবন্ধে আমরা আলোকপাত করব ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে।
ভিডিও এডিটিং কী?
বিয়ে, জন্মদিন, নাটক, টেলিফিল্ম, পূর্ণ দৈর্ঘ্য ছায়াছবি, স্বল্প দৈর্ঘ্য ছায়াছবি, সামাজিক, ব্যবসায়িক বিভিন্ন প্রোগ্রামের ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ সম্পাদনা করে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। এই সম্পাদনার কাজকে ভিডিও এডিটিং বলা হয়। যিনি কাজটি করেন তাঁকে বলা হয় ভিডিও এডিটর।
যোগ্যতা ও ক্যারিয়ার সম্ভাবনা
দেশে এখন ডজনের বেশি সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল আছে। প্রতিদিন টিভি চ্যানেলগুলোতে সংবাদের পাশাপাশি অসংখ্য অনুষ্ঠান, নাটক, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান প্রচার হয়। এসব অনুষ্ঠান টিভি চ্যানেল ছাড়াও বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থা নির্মাণ করে থাকে। আমাদের দেশে ভিজ্যুয়াল মিডিয়া সম্প্রসারণের সাথে বাড়ছে ভিডিও এডিটরদের চাহিদাও।
ন্যূনতম এইচএসসি পাস হলে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ নিয়ে ভিডিও এডিটর হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া যায়। এ পেশায় সৃজনশীলতা থাকা খুবই জরুরি। টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে কী ধরনের বৈচিত্র্য আনা সম্ভব, সেই বিবেচনা শক্তি থাকা চাই। একজন ভিডিও এডিটরকে চোখ রাখতে হয় দেশ-বিদেশের টিভি পর্দায়। কোথায়, কোন অনুষ্ঠানে কী বৈচিত্র্য এলো, সেদিকে তীক্ষ্ন নজর রাখতে হয়।
চিত্রগ্রাহকদের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ কাটছাঁট করে দৃশ্যের পর দৃশ্য সাজিয়ে দর্শকদের দেখার উপযোগী করে তোলাই ভিডিও এডিটরদের কাজ। দেশের সবগুলো টিভি চ্যানেলেই দক্ষ এডিটরদের কাজের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন এডিটিং ফার্ম। ফুলটাইম এবং পার্টটাইম দু’ভাবেই ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ করা যায়। কেউ চাইলে অন্য চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্স কাজ করতে পারেন ভিডিও এডিটর হিসেবে।
এছাড়া দেশের বাইরেও কাজের চাহিদা রয়েছে অনেক। ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রতিটিতে আছে শতশত টেলিভিশন চ্যানেল। এসব টিভি চ্যানেলে নিজ দেশের দক্ষ জনবল নিয়ে কাজ করতে তাদের বড় অংকের ব্যয় বহন করতে হয়। সেখানে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দক্ষ জনশক্তি দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম খরচে কাজ করানো যায়। ফলে আমাদের এ অঞ্চলের দক্ষ জনশক্তির জন্য বিশেষ করে ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টিভি মিডিয়ায় ভিডিও এডিটর হিসেবে চাকরি পাওয়া অনেকটাই সহজ। এসব দেশে এ পেশায় বেতন কাঠামোও বেশ ভালো।
প্রশিক্ষণ ও ফি
দেশে-বিদেশে যেখানেই কাজ করুন না কেন, আগে দরকার এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ। ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ শিখে ছেলেমেয়েরা দেশেই ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি জুটিয়ে নিতে পারবেন অবলীলায়। এর বাইরেও অবসরে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন।
মেয়াদ ও ফি
সাধারণত প্রতিষ্ঠানভেদে কোর্স ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত এবং কোর্স ফি ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা হয়ে থাকে ।
ভিডিও এডিটিং কোথায় শিখবেন?
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোর্স করিয়ে থাকে। তাছাড়া অভিজ্ঞ কারো কাছে ব্যক্তিগতভাবেও শেখার চেষ্টা করতে পারেন। নিচে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা দেয়া হলো-
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট
১২৫/এ, দারুস সালাম
এ ডব্লিউ চৌধুরী রোড
মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।
ফোন : ৮০৩৫৯৫৮
পিএবিএক্স : ৯০০৭৪১০-৪
ফ্যাক্স : ৯০০৫৫৮০
সেন্টার ফর অ্যাডভান্স মিডিয়া
নূরজাহান টাওয়ার (৪র্থ তলা)
২ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা
ইজি কমিউনিকেশন
১৮০-১৮১ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি
(৬ষ্ঠ তলা)
বিজয়নগর, ঢাকা-১০০০।
ফোন : ০১৯১১-০১৪১৮০, ০১৬৭৮-০২৯৭২৪।
চিত্রবাণী
সাহেরা ট্রপিক্যাল সেন্টার (৬ষ্ঠ তলা)
২১৮ এলিফ্যান্ড রোড, ঢাকা-১২০৫
ফোন : ০১৬৭৩১৭৩৯২২
ইমেজ মিডিয়া ট্রেনিং সেন্টার
৫২, নিউ ইস্কাটন
টিএমসি বিল্ডিং (৫ম তলা)।
মোবাইল : ০১৭১৩-৩৩৯৬৯৬
মাইলাইন কমিউনিকেশন্স
মালেক টাওয়ার (৬ষ্ঠ তলা)
ফার্মগেট, ঢাকা
ফোন: ৯১৩৯৯২৭
লেখক : পল্লব মুনতাকা
দারুণ