বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের শূন্যপদগুলো বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পূরণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষার আবেদনপত্র আহ্বান করেছে। ৩৭তম বিসিএস-এ এক হাজার ২২৬টি শূন্য পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। অনলাইনে আবেদনপত্র নেয়া শুরু : আগামী ৩১ মার্চ ২০১৬। আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ : ২ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
আবেদনের যোগ্যতা : প্রার্থীদের যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছরের সম্মান ডিগ্রি পেতে হবে।
কোন পদে কতজন : সাধারণ ক্যাডারে ৪৬৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ ছাড়াও পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২০ জন, সমবায় ক্যাডারে ৯ জন, ডাকে ৯ জন, আনসার ক্যাডারে সাতজন, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে সাতজন, ইকোনমিক ক্যাডারে ছয়জন, তথ্য ক্যাডারে ছয়জন ও রেলওয়ে ক্যাডারে একজন নিয়োগ করা হবে। প্রফেশনাল ক্যাডারের মধ্যে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে ২৭২ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন হিসেবে ১৮ জন, মৎস্য ক্যাডারের উপসহকারী পরিচালক হিসেবে ৬৪ জন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে ১৯ জন, কৃষি ক্যাডারে ৫০ জন, বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারে ৪২ জন, হাঁস-মুরগি উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে পাঁচজন, গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ২৫ জন, সহকারী প্রকৌশলী (ইএম) হিসেবে ১১ জন, রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে সাতজন, সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হিসেবে একজন, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশল ক্যাডারে ১২ জন, সহকারী প্রকৌশলী বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারের সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে আটজন, খাদ্য ক্যাডারে দু’জন, মৃত্তিকাসম্পদ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে একজনসহ ৫৩৭ জন নিয়োগ দেয়া হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের মধ্যে প্রভাষক হিসেবে হিসাববিজ্ঞানে ২২ জন ও ব্যবস্থাপনায় ২২ জন, বাংলায় ২১ জন, অর্থনীতিতে ২০ জন, দর্শনে ১৯ জন, ইতিহাসে ১৯ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ১৮ জন, গণিতে ১৫ জন, ইংরেজিতে ১৪ জন, গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে ১৩ জন, উদ্ভিদবিদ্যায় সাতজন, কম্পিউটারে পাঁচজন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পাঁচজন, মনোবিজ্ঞানে পাঁচজন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ে চারজন, পরিসংখ্যানে তিনজন, সংস্কৃতিতে তিনজন ও কৃষিবিজ্ঞানে তিনজন, সমাজকল্যাণে দু’জন, প্রাণিবিদ্যায় একজনসহ মোট ২২৪ জন নিয়োগ দেয়া হবে। তবে পদসংখ্যা যেকোনো ক্ষেত্রেই কম-বেশি হতে পারে।
অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ : অনলাইনে আগামী ৩১ মার্চ সকাল ১০টা থেকে ২ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
বয়সসীমা : ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে প্রার্থীর বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার
সন্তান এবং বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ক্ষেত্রে বয়স ৩২ বছর। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রে শুধু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেলায় বয়স ২১ থেকে ৩২ বছর।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষা : প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএসের প্রথম ধাপ। মনে রাখবেন, বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়া কঠিন। কাজেই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিন। নতুন নিয়মে দুই ঘণ্টা সময়ে মোট ১০টি বিষয়ের ওপর ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে ৩৫ করে ৭০ নম্বর, বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ৩০, আন্তর্জাতিক বিষয়বলিতে ২০, ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ১০ নম্বর, সাধারণ বিজ্ঞানে ১৫, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ১৫, গাণিতিক যুক্তিতে ১৫, মানসিক দক্ষতায় ১৫ এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন বিষয়ে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি : বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যবই গুরুত্ব দিয়ে পড়বেন। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যবই থেকে গাণিতিক যুক্তি, সাধারণ বিজ্ঞান, ভূগোলসহ অন্যান্য বিষয়ও পড়বেন। আর সাধারণ জ্ঞানের জন্য প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকা পড়বেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। পরীক্ষায় ২০০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবেন ও ভুল উত্তরের জন্য .৫০ নম্বর কাটা যাবে।
বিসিএস পরীক্ষার আবেদনপত্র পূরণ : ৩৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি টেস্টে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক অনুমোদিত আবেদনপত্র (BPSC Form-1) অনলাইনে পূরণ করে আবেদন করতে হবে।
অনলাইনে BPSC Form-1 পূরণ : প্রার্থীকে টেলিটকের ওয়েবসাইট http://bpsc.teletalk.com.bd অথবা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইট www.bpsc.gov.bd এর মাধ্যমে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত আবেদনপত্র (BPSC Form-1) পূরণ করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম ও ফি জমা দিতে হবে।
পরীক্ষার ফি জমা দেয়া : অনলাইনে আবেদনপত্র যথাযথভাবে পূরণ করে নির্দেশনামতো ছবি ও প্রার্থীর স্বাক্ষর আপলোড করে প্রার্থী কর্তৃক আবেদনপত্র submit শেষ হলে কম্পিউটারে ছবিসহ Application প্রিভিউ দেখা যাবে। নির্ভুলভাবে আবেদনপত্র Submit শেষ হলে প্রার্থী user ID সহ ছবি এবং স্বাক্ষরযুক্ত একটি Applicant’s কপি পাবেন। Application প্রিভিউ এবং Applicant’s কপিতে প্রার্থীর ছবি, স্বাক্ষর অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। ওই Applicant’s কপি প্রার্থীকে প্রিন্ট অথবা ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে হবে। Applicant’s কপিতে একটি user ID নম্বর দেয়া থাকবে এবং এই user ID নম্বর ব্যবহার করে টেলিটক বাংলাদেশ লি: কর্তৃক এসএমএস-এর মাধ্যমে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসারে প্রার্থীকে যেকোনো টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে এসএমএস করে ৩৭তম বিসিএস পরীক্ষার ফি বাবদ ৭০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীরা ১০০ টাকা জমা দেবেন এবং পরে প্রার্থীরা প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে পারবেন। শুধু user ID প্রাপ্ত প্রার্থীরা Applicants কপিতে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী অর্থাৎ আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখের পরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থীদের ফি জমা দেয়া শেষ করতে হবে। অর্থাৎ ৫ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ফি জমা দিতে হবে।
প্রবেশপত্র সংগ্রহ : পরীক্ষার নির্ধারিত ফি জমা দেয়া হলে টেলিটক মোবাইল থেকে প্রেরিত উত্তরে প্রদত্ত একটি user ID এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রার্থী তার প্রার্থিত কেন্দ্রের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের রেঞ্জ থেকে কম্পিউটারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে সাময়িকভাবে রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংবলিত প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
৩৭তম (বিসিএস) প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ : ৩৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সঠিক তারিখ, সময় ও আসন ব্যবস্থা কমিশনের ওয়েবসাইট ও সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বিস্তারিত জানতে : বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইট www.bpsc.gov.bd দেখুন।