চাকরির বাজারে বর্তমান সময়ের অন্যতম চাহিদাপূর্ণ পেশা হলো ব্যাংকার। ভালো বেতন আর বাড়তি সুযোগসুবিধা থাকায় ব্যাংকিং হয়ে উঠেছে তরুণদের পছন্দের পেশা। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদের ১৭১টি পদে নিয়োগের নিমিত্তে প্যানেল প্রস্তুতির জন্য নিচের শর্তাধীনে বাংলাদেশী নাগরিকদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে। অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ : ৬ মার্চ ২০১৬।
শিক্ষাগত যোগ্যতা : স্নাতকোত্তর বা সমমান অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি থাকলে আবেদন করা যাবে। যেকোনো দু’টি পরীক্ষায় থাকতে হবে প্রথম বিভাগ বা শ্রেণী কিংবা সমমানের গ্রেড পয়েন্ট। কোনো পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ বা সমমানের গ্রেড পয়েন্ট থাকলে হবে না। এসএসসি ও এইচএসসির ফলের ক্ষেত্রে জিপিএ ৩ বা তার বেশি প্রথম বিভাগ, জিপিএ ২ থেকে জিপিএ ৩-এর কম দ্বিতীয় বিভাগ এবং জিপিএ ১ থেকে জিপিএ ২-এর কম থাকলে তৃতীয় বিভাগ ধরা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ’র ক্ষেত্রে ৪-এর মধ্যে ৩ বা তার বেশি প্রথম বিভাগ, সিজিপিএ ২.২৫-এর বেশি কিন্তু সিজিপিএ ৩-এর কম দ্বিতীয় বিভাগ এবং সিজিপিএ ১.৬৫-এর বেশি, কিন্তু সিজিপিএ ২.২৫-এর কম তৃতীয় শ্রেণী ধরা হবে। ‘ও’ লেভেল ও ‘এ’ লেভেলের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড এবং বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির ক্ষেত্রে দেশীয় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ইস্যু করা সমমান সার্টিফিকেট লাগবে।
বয়সসীমা : ১-১-২০১৬ তারিখে প্রার্থীদের বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর।
বেতন স্কেল : ২২০০০-৫৩০৬০/- (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী) ও তার সাথে নিয়মানুযায়ী অন্যান্য সুবিধা দেয়া হবে।
আবেদনের নিয়ম : অনলাইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। কোনো ফি লাগবে না। আবেদনের আগে একটি ডিজিটাল ছবি অথবা স্ক্যান করা ছবি রাখুন। পাশাপাশি স্ক্যান করে রাখুন আপনার একটি সই। সব ধরনের তথ্য দেয়ার পর সংযুক্ত করতে হবে ছবি ও স্বাক্ষর। ৮০ কিলোবাইটের বেশি ছবি আপলোড করা যাবে না, রেজুলেশন হতে হবে ৬০০× ৬০০। স্বাক্ষরের বেলায় রেজুলেশন হতে হবে ৩০০ × ৮০, সর্বোচ্চ সাইজ হবে ৬০ কিলোবাইট। তথ্য পূরণ করার পর দিতে হবে পাসওয়ার্ড। কোনো কোটার আওতাভুক্ত হলে ফরমে দেয়া অপশনে ক্লিক করতে হবে। সফলভাবে আবেদন ফরম পূরণ করা হলে দেয়া হবে একটি ট্র্যাকিং নম্বরযুক্ত ফরম। ফরমটি সংরক্ষণ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার সময় এটির দরকার হবে। লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের পর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনে উল্লিখিত তথ্যাদির সমর্থনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হবে। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটাসংক্রান্ত নীতিমালা ও অন্যান্য বিধিবিধান অনুসরণ করা হবে। বিবাহিত মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে।
নিয়োগ পদ্ধতি : এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হবে পত্রিকা ও ওয়েবসাইটে। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে তৈরি করা হবে মেধাতালিকা। নির্বাচিত প্রার্থীদের সেখান থেকে ডাকা হবে মৌখিক পরীক্ষায়। সরকারি ব্যাংকগুলোতে যেকোনো বিষয় থেকে পাস করা প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। সরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা বেশি হয়। তাই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকে। এ জন্য বিগত বছরের সব ধরনের সরকারি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সমাধান করলে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে। এ জন্য আপনারা অন্তত বিগত পাঁচ বছরের প্রশ্ন সমাধান করতে পারেন।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি : গত বছর নিয়োগ পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি থেকে মোট ৮০টি এমসিকিউ প্রশ্নে ১০০ নম্বর ছিল। প্রতিটি প্রশ্নে থাকবে ১.২৫ নম্বর। রয়েছে নেগেটিভ মার্কিং। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি ও গণিত এ তিন বিষয়ের ওপর প্রশ্ন আসবে। বাংলা বিষয়ে ভাবসম্প্রসারণ, পত্রলিখন, ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ ও বাংলা ব্যাকরণের সাধারণ বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন থাকতে পারে। ইংরেজিতে গ্রামার, অনুবাদ, বাক্য তৈরি ও শুদ্ধকরণ, প্যারাগ্রাফ, কম্পোজিশন ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন আসে। গণিতে প্রশ্ন আসে পাটীগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি থেকে। বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নবম-দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবই গুরুত্ব দিয়ে পড়বেন। তবে বিসিএসের প্রস্তুতি থাকলে এ পরীক্ষার প্রস্তুতিও অনেকটাই হয়ে যায়। সাধারণ জ্ঞানের জন্য সাধারণ জ্ঞানের মাসিক বই, দৈনিক পত্রিকা পড়লেই হবে।
মৌখিক পরীক্ষা : মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীদের ২৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এমসিকিউ এবং লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পর প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি জানিয়ে দেয়া হবে। এরপর প্রার্থীদের জমা দিতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। প্রার্থীর বিশ্লেষণী ক্ষমতা, দক্ষতা, উপস্থাপনা, পোশাক দেখা হয় মৌখিক পরীক্ষায়। পরীক্ষায় প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষার পাঠ্য বিষয়, নিজ জেলা, কৃষি, অর্থনীতি মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হবে।
সুযোগ-সুবিধা ও পদোন্নতি : কৃষি ব্যাংকে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তাড়াতাড়ি পদোন্নতি পাওয়া যায়। চাকরিতে যোগ দেয়ার তিন বছর পরই পেতে পারেন প্রমোশন। তা ছাড়া নতুন সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বছরের জুলাই মাসে বেতনও বাড়বে । সরকারি সব ধরনের সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি কৃষি ব্যাংকের এ চাকরিতে রয়েছে সহজে ঋণ নেয়ার সুযোগ । রয়েছে সুপার নুয়েশন ফান্ড।
অনলাইনে আবেদন : আগ্রহী প্রার্থীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট https://erecruitment.bb.org.bd/onlineapp/joblist.php-এ আবেদন ফরম পূরণের মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে।