সুস্বাস্থ্যের জন্য সুচিন্তা

তাজওয়ার তাহমীদ

কোনো কাজে মন বসে না। সব কাজে বিরক্তিভাব। সহজেই রেগে যান। ঘুম আসে না অথবা বেশি ঘুমান। হতাশা। দুশ্চিন্তা। খেতে ইচ্ছা করে না বা খুব খাওয়ার ইচ্ছা। বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই। সব সময় খারাপ চিন্তা। অহরহ মাথাব্যথা। পেটের অসুখ ছাড়ে না। পিঠব্যথা। ঘাড় ব্যথা। শরীর ব্যথা। পেট ব্যথা। বমি বমি ভাব। সব সময় দুর্বলতা। কোনো কিছুই মনে থাকে না ইত্যাদি।

ওপরের লক্ষণগুলো কোনো না কোনোভাবে প্রায় সবার মধ্যেই দেখা যায়। তাই বলে সবাই কিন্তু অসুস্থ নয়। তবে সুস্থও নয়। সুস্থতার জন্য যেমন প্রয়োজন শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক সুস্থতা। শরীর, মন ও আত্মার ভারসাম্য না থাকলে কারো মধ্যে সুস্থতার লক্ষণ বিকশিত হয় না। Health, Wholeness, holiness- এ তিনটি শব্দের বিকাশ ঘটে body, mind and Soul-এর মাধ্যমে। যখন কোনো মানুষ তার চিন্তায় নেতিবাচক ভাব ধারণ করে, তখন তার মনে আসে ঘৃণা, ভয়, রাগ, উদ্বিগ্নতা, হতাশা, বিষণ্ণতা ইত্যাদি। ফলে সে কোনো ভালো কাজ করতে পারে না। কোনো কাজে তার সফলতা আসে না। সব কাজেই তার হতাশা-নিরাশার খেলা চলে। অন্য দিকে যারা ইতিবাচক চিন্তার মানুষ, তাদের মনে থাকে আশা, ভালোবাসা, সৃষ্টিশীলতা, মনের মাধুরতা, আর বিশ্বাসের বলিষ্ঠতা। এসব লোক সব কাজে সফলতা পায়। তারা নব নব চিন্তায় নিজেদের ভাবনাকে বাস্তবে রূপায়িত করে। তারাই গড়ে তোলে পৃথিবীর সব অসম্ভব কাজের পাহাড়। তাদের চেতনায় পৃথিবীতে জাগে প্রাণের সঞ্চার। আমরা এক কথায় বলতে পারি, যারা ইতিবাচক চিন্তা করেন তারা সুস্থ থাকেন। তাদের মধ্যে থাকে Creativity, enthusiasm, love, faith, hope. অন্য দিকে যারা নেতিবাচক চিন্তা করেন তাদের মাঝে থাকে- hate, fear, worry, anger, anxiety. ফলে তারা প্রায়ই অসুস্থ থাকেন।
নেতিবাচক চিন্তার ফলে মানুষের মনে সন্দেহপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়। আর সন্দেহপ্রবণতা হচ্ছে বহু রোগের মূল শক্তি। সন্দেহপ্রবণ লোকেরা কখনো ভালো কাজ করতে পারে না। এখানে মনে রাখা দরকার, যারা আল্লাহতে বিশ্বাসী তারা সন্দেহপ্রবণ হতে পারে না। যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারাই সন্দেহপ্রবণতায় ভোগে (দেখুন- আল কুরআন, সূরা মুদাচ্ছির, আয়াত-৩১)। আবার দেখা যায়, চরিত্রগতভাবেই মানুষের মন মন্দ কাজের প্রতি আগ্রহী থাকে। পবিত্র কুরআনে বলা আছে- ‘নিশ্চয়ই মানুষের মন মন্দকর্মপ্রবণ। কিন্তু সে নয়, আমার পালন কর্তা যার প্রতি অনুগ্রহ করেন’। (সূরা ইউসুফ-৫৩)। অর্থাৎ বিশ্বাসী কখনো নেতিবাচক চিন্তার দ্বারা প্রভাবিত হয় না। সুতরাং তাদের মধ্যে হতাশাও দেখা দিতে পারে না। যারা আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসী, তারাই হতাশাগ্রস্ত হয়। যেমন আল কুরআনে রয়েছেÑ ‘আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কেউ নিরাশ হয় না’। (সূরা ইউসুফ-৮৭)। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বাস মানুষকে সন্দেহপ্রবণতা থেকে মুক্তি দিতে পারে। সন্দেহপ্রবণতা থেকে বাঁচতে পারলে সুস্থতার চাবিকাঠি পাওয়া যাবে। এ জন্য আমরা নিয়মিত সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে পারি, Lord, give me health; lord, give me wholeness; lord, give me holiness.
ইসলামিক সাইকোথেরাপি ফিচার

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top